বাতাসে লাশের গন্ধ

শতাব্দীর ভয়ংকর ভূমিকম্পে সাগাইং এখন মৃত্যুপুরী। মিয়ানমারে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল সাগাইং শহরটি যেন পারমাণবিক বোমায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। মরদেহের গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো শহরে।

যেদিকে চোখ যায় ধ্বংসাবশেষ। আর তার নিচে চাপা পড়ে আছে লাশ। মরদেহ বা চাপা পড়ে থাকা জীবিতদের উদ্ধারে বিন্দুমাত্র কোনো প্রচেষ্টা নেই জান্তা সরকারের।

উল্টো রাস্তায় রাস্তায় তল্লাশির মাধ্যমে আরও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। সিএনএনকে দেওয়া ধসে পড়া সাগাইং শহরের ভূমিকম্প-পরবর্তী অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) স্থানীয় বাসিন্দা কো জেয়ার বলেন, আমরা নিজেরাই যতটুকু পাড়ছি গৃহস্থালি সরঞ্জাম দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। সবাই মিলে গণকবরে ব্যবস্থা করছি।

গাজার রাফাহ শহর দখল করলো ইসরায়েল

বিস্তারিত পড়ুন

সাগাইংয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশপাশের গ্রামীণ শহরগুলো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। মান্দালয় থেকে ৪৫ মিনিট দূরত্বের এ শহরটিতে আসতে এখন সময় লাগে ৪৫ মিনিট।

গত ২৯ মার্চ ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। রাস্তায় বড় বড় ফাটল-গর্ত, ছোট ছোট ব্রিজ-কালভার্টগুলো সব ভেঙে গেছে। এখন পর্যন্ত তিন হাজার ১৪৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আরও কত দেহ চাপা পড়ে আছে তার হিসাব নেই। যার বেঁচে আছেন তারাও আতঙ্কে দিন পার করছেন। ভূমিকম্পের ৭ দিন পরও থেকে থেকেই আফটারশক হচ্ছে।

ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩,০০০

বিস্তারিত পড়ুন

ভয়ে স্থানীয়রা কেউ ঘরে ঘুমাচ্ছেন না। প্রায় পুরো শহরটির মানুষ এখন- রাস্তা, প্ল্যাটফর্ম, ফুটবল মাঠে ঘুমান। আমি নিজেও ঘরের ভেতরে ঘুমাই না। দরজায় ঘুমাই। যেন সহজেই দৌড়াতে পারি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আরেকটি আফটারশক আঘাত হানার পর ফোনে সিএনএন’কে এ কথা বলেন জেয়ার। আফটারশকগুলো অঞ্চলটিকে কাঁপিয়ে তুলছে।

আরেক স্বেচ্ছাসেবক কিয়াও মিন বলেন, সাগাইংয়ের যেদিকেই তাকান- ঘরবাড়ি, স্কুল, মন্দির, মসজিদ এবং দোকান ধ্বংসস্তূপে ভরা। আমরা উদ্ধারকারীরা খালি হাতে বা ন্যূনতম সরঞ্জাম দিয়ে জীবিতদের সন্ধানে ধ্বংসস্তূপ খনন করে চলছি। আমরা আমাদের কাছে থাকা সামান্য সরঞ্জাম দিয়ে যতটা সম্ভব মানুষকে বাঁচাতে পেরেছি।

নামাজরত অবস্থায় পাঁচ শতাধিক মানুষের মৃত্যু

বিস্তারিত পড়ুন

আমরা অনেক মরদেহ উদ্ধার করেছি, যার মধ্যে শিশু এবং বয়স্করাও রয়েছেন... মাথা, হাত বা পা ছাড়া মরদেহ ... আমরা এত ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন আগে কখনো হইনি।

একই মন্তব্য জাতিসংঘের সাবেক বিশেষ প্রতিবেদক ইয়াংহি লির। তিনি বলেন, আমরা কেবল বেসামরিক লোকদের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খনন করতে দেখছি। কেন মিন অং হ্লাইং তার সব সামরিক বাহিনীকে উদ্ধার ও ত্রাণের জন্য পাঠাননি?