ঢাকা সোমবার, ০৭ এপ্রিল, ২০২৫

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে ‘মিথ্যাচার’ ও দুর্নীতির অভিযোগ

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৫, ০৯:১৪ এএম
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের সাবেক নগর মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দেশটির পার্লামেন্টে মিথ্যাচার করার অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল শনিবার (৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে তার নামে থাকা একটি ফ্ল্যাটের বিষয়টি নিয়ে এই অভিযোগটি তোলা হয়েছে।

বর্তমানে, বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই ফ্ল্যাটটি জব্দ করেছে, যার মূল্য প্রায় ৬ লাখ পাউন্ড। দুদক এর সঙ্গে সম্পর্কিত তদন্তও চলমান। তবে ৪২ বছর বয়সি টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, তিনি কোনো বেআইনি কাজ করেননি।

ডেইলি মেইল এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, "২০০২ সালে আমি আমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে উপহার হিসেবে ওই ফ্ল্যাটটি পেয়েছিলাম। ২০১৫ সালে, আমি এটি আমার বোন আজমিনার কাছে হস্তান্তর করি। ওই বছরই আমি ব্রিটিশ এমপি নির্বাচিত হই, এরপর আমি এটি তার নামে রেজিস্টার করি।"

যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিনিস্টার রেজিস্টারে এমপিদের সম্পত্তি সম্পর্কিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যরা ওই ফ্ল্যাটের যৌথ মালিক ছিলেন। তবে পরের মাসে, ২০১৫ সালের জুলাইয়ে, টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেন যে, তিনি এটি তার বোনকে হস্তান্তর করেছেন। তবে, ডেইলি মেইল গত সপ্তাহে ঢাকা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অনুসন্ধান করে জানতে পারে যে, এখনো টিউলিপ সিদ্দিক এই ফ্ল্যাটটির মালিক, যা দুদক দাবি করছে।

গত মাসে, দুর্নীতি দমন কমিশন জানায় যে, ২০১৫ সালে টিউলিপ সিদ্দিক হেবার মাধ্যমে এই ফ্ল্যাটটি তার বোন আজমিনার কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা করেছিলেন। হেবা একটি ইসলামিক নথি, যার মাধ্যমে একজন পরিবারের সদস্য অন্য সদস্যকে ‘ভালোবাসার খাতিরে’ কিছু দান করতে পারেন। তবে, বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের বাইরে হেবা নথি সম্পাদন আইনগতভাবে বৈধ নয়।

দুদক আরও জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিকের হেবা নথি ‍‍‘ভুয়া‍‍’ এবং যেই ব্যারিস্টারের মাধ্যমে এটি সম্পাদন করা হয়েছে, তিনি এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। ওই ব্যারিস্টার দাবি করেছেন যে, তার স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছে। এখন এই বিষয়ে আদালত যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে।

এখন দেখার বিষয় যে, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কেমন হবে এবং এই পরিস্থিতি কীভাবে পরবর্তীতে সমাধান হবে।