কাঁদছে গাজা, কাঁদছে ফিলিস্তিন, চোখের সামনে পুড়ছে সবকিছু। নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে সর্বশ্রেণি। মা-বাবা-ভাইবোন পাখির মতো মরছে। এ নিয়ে বিশ্ববাসীর নেই কোনো মাথাব্যথা। ইসরায়েলি মিসাইল একের পর এক আঘাতে ধ্বংস করেই যাচ্ছে ফিলিস্তিনকে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দক্ষিণ গাজার ভেতরে নতুন করে একটি নিরাপত্তা করিডোর তৈরির ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। এরইমধ্যে দক্ষিণের রাফাহ শহরকে বাকি গাজা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে মোরাগ করিডোর স্থাপন করেছে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী।
মিডল ইস্ট আই-এর একটি প্রতিবেদন বলছে, মোরাগ ছিল একটি ইহুদি বসতি, যা রাফাহ ও খান ইউনিসের মাঝামাঝি অবস্থান করত। নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন, করিডোরটি এই দুই শহরের মধ্য দিয়ে যাবে।
সম্প্রতি বেশকিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে যেখানে দেখা যায়, মিসাইলের আঘাতে মানুষ ১০-১৫ তলারও বেশি উচ্চতায় উঠে আবার নিচে পড়ে যাচ্ছে। এ যেন সিনেমাকেও হার মানাচ্ছে। যেন বিশ্বের সব বর্বরতাকে আধুনিক সময়ের কাছে নগণ্য করে তুলছে।
গাজায় যেন ইসরায়েলি বোমা হামলা বৃষ্টির মতো ঝড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সাংবাদিক, শিশুসহ অন্তত ৪৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে দক্ষিণ গাজায় ১৫ জন জরুরিকর্মী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ভুল করেছে বলে স্বীকার করেছে ইসরায়েল।
রোববার (৬ এপ্রিল) বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ওই সময় রাফার কাছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) অ্যাম্বুলেন্স, জাতিসংঘের একটি গাড়ি এবং গাজার সিভিল ডিফেন্সের একটি দমকলের গাড়ির ওপর গুলি চালানো হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, মানষের ওপর মানুষ, লাশের ওপর লাশ। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা নানা পোস্টে তাদের মতামত শেয়ার করছে। কেউ কেউ বলছে, এই ইসরায়েলিদের নৃশংসতার শেষ কোথায়?
গাজার এই ভয়াবহ চিত্র দেখে শুধু যে মুসলিমদের হৃদয় ব্যথিত হচ্ছে তা নয়, ভিন্নধর্মীরাও ব্যথিত। কেননা ইসরায়েলিদের স্মরণকালের সবচেয়ে বড় এই নৃশংসতায় হতবাক পুরো বিশ্ব।
এদিকে গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ শিশু হতাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ হাজার ৬০৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। পাশাপাশি আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৩ জন আহত হয়েছে।
যদিও সরকারি মিডিয়া অফিস মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০-এর বেশি বলে জানিয়েছে ইতিমধ্যে। আর প্রতি ৪৫ মিনিটে একটি শিশু মরছে বলেও তারা জানিয়েছে।