‘আমাকে ক্ষমা করে দাও মা। এই পথটাই আমি বেছে নিয়েছি মা, মানুষকে সাহায্য করার জন্য।’ মৃত্যুর ঠিক আগে মায়ের উদ্দেশ্যে মোবাইলে রেকর্ড করা স্বাস্থ্যকর্মী রেফাত রাদওয়ানের কথা এটি।
গাজার স্বাস্থ্যকর্মী রেফাত রাদওয়ান, গত ২৩ মার্চ ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন, তার মৃত্যুর আগে মায়ের উদ্দেশ্যে মোবাইলে একটি শেষ ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন। আর এই ভিডিওতে শোনা যায়, ‘আমাকে ক্ষমা করে দাও, মা, এই পথটাই আমি বেছে নিয়েছি, মানুষের সাহায্য করার জন্য।’
মৃত্যুর শিকার হওয়ার আগে রেফাত তার কণ্ঠে ভয় স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছিল, কারণ ভিডিওটির মধ্যে তীব্র গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এ ভিডিওর শেষ মুহূর্তে, রেফাতকে বলতে শোনা যায়, ‘ইহুদিরা আসছে, ইহুদিরা আসছে,’
এই ভিডিও বার্তাটি গত ২৩ মার্চের মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এবং ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রকাশ করেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি চলন্ত গাড়ি থেকে শুট করা হচ্ছে, যেখানে কেবল একের পর এক গাড়ি চলছেই, এবং গোলাগুলি চলছে।
ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, রেফাত রাদওয়ানের মোবাইল থেকে উদ্ধার করা ভিডিওটি ৫ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওতে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবার দিকে কেবলই গুলির শব্দ।
জাতিসংঘ ও পিআরসিএস জানিয়েছে, ২৩ মার্চের ওই হামলায় ১৫ জন মানবিক সহায়তা কর্মী নিহত হন।
তবে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে যে তারা কোনো অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করেনি, বরং সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে।
কিন্তু পিআরসিএসের প্রকাশিত ভিডিওটি ইসরায়েলি বাহিনীর দাবির বিপরীতে গিয়েছে, যেখানে অ্যাম্বুলেন্সগুলোসহ হেডলাইটেও গুরি রকরতে দেখা গেছে।
এ ঘটনার পর আন্তর্জাতিক পাড়ায় নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের প্রধান জোনাথন হুইটল বলেছেন, ‘নিহতদের মরদেহ তাদের ইউনিফর্ম এবং হাতে গ্লাভস পরা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।’
পিআরসিএস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইসরায়েলের বক্তব্য যে মিথ্যা, তা এই ভিডিও একেবারে প্রমাণ করেছে। এই ফুটেজ সত্যকে উন্মোচন করে এবং মিথ্যা বর্ণনাকে ভেঙে দেয়।’
নিহতদের মধ্যে আটজন পিআরসিএস কর্মী, ছয়জন গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার সদস্য এবং জাতিসংঘের সংস্থার একজন কর্মী ছিলেন। তাদের মৃতদেহ রাফাহ-এর কাছে সমাধিস্থ করা হয়, যা জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় গণকবর হিসেবে বর্ণনা করেছে।