ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অব্যাহত ইসরায়েলি বিমান হামলায় গত ২০ দিনে প্রায় ৫০০ শিশু নিহত হয়েছে। এই হামলায় গাজার ৪৯০টি শিশুর মৃত্যু ঘটেছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক নিন্দার জন্ম দিয়েছে। এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনে প্রায় ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু।
বার্তাসংস্থা আনাদোলুর সোমবার (৭ এপ্রিল) প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজার মিডিয়া অফিস রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, গত ২০ দিনে ইসরায়েলি বাহিনী ৪৯০ জন ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করেছে। তারা এই হত্যাকাণ্ডকে আধুনিক সময়ে মানবতাবিরোধী সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং ইসরায়েলকে গাজার অসহায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা চালানোর জন্য দায়ী করেছে।
গাজার মিডিয়া অফিস দাবি করেছে, ইসরায়েলি বিমান হামলা শিশুদের ওপর বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু ছিল। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২০ দিনে ইসরায়েল শিশুদের ওপর এক ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে, যেখানে ৪৯০ শিশু নিহত হয়েছে। এই সময়ে মোট শহীদের সংখ্যা ১৩৫০ জনে দাঁড়িয়েছে।
এই ঘটনার পেছনে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, বেসামরিক হতাহতের ঘটনা আকস্মিক। তবে গাজার মিডিয়া অফিস এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে এবং যুক্তি দিয়েছে যে, এসব প্রাণহানির পরিসংখ্যান ইসরায়েলের একটি ইচ্ছাকৃত ও পদ্ধতিগত নীতিকে প্রতিফলিত করে, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনি শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করছে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় আক্রমণ আরও বৃদ্ধি করার ঘোষণা দেন। এছাড়া, ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি আক্রমণে প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক নিন্দা এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
গাজায় চলমান এই সহিংসতার জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হতে পারে, যা ইসরায়েলের মানবাধিকার রেকর্ডকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।