চীনকে মোকাবিলায় ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী গোপন অস্ত্র’ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, এসব অস্ত্রের ভয়াবহতা সম্পর্কে কেউ কল্পনাও করতে পারবে না।
দিন যত যাচ্ছে, ততই তীব্র হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের শুল্কযুদ্ধ। এই যুদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ নেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত ২ এপ্রিল, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। একই দিনে চীনের পণ্যের ওপর নতুন করে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়, যা পূর্বের শুল্কসহ মোট ৫৪ শতাংশে দাঁড়ায়।
জবাবে, চীনও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর আবারও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, ফলে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। পরে, চীনও পাল্টা জবাব হিসেবে মার্কিন পণ্যের ওপর ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়।
সবশেষ, বুধবার (৯ এপ্রিল) ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ ১০৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের এই যুদ্ধ এখন আর শুধু শুল্ক আরোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। পাল্টাপাল্টি শুল্কের এই সংঘাত অন্য কোন দিকে মোড় নিতে পারে কি না—এই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
জবাবে তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট এমন কিছু করবেন না যা উত্তেজনা বাড়াতে পারে। তার আশা, এই উত্তেজনা কেবল শুল্ক যুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, চীনের প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র রয়েছে। এসব গোপন অস্ত্রের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্ব এখনও কিছুই জানে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে জোট গড়েছে চীন। এক যৌথ বিবৃতিতে বেইজিং এবং ইইউ জানায়, তারা বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার ভিত্তি রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি, ট্রাম্পের প্রতিশোধমূলক শুল্কনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় উভয় পক্ষ।
অন্যদিকে, এই শুল্ক যুদ্ধের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ৮০ শতাংশ বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, এর ফলে বৈশ্বিক জিডিপি ৭ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :