যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’-এ কেউই বিজয়ী হতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ ঘিরে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বাড়তে থাকলেও, এই প্রথমবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুললেন শি জিনপিং।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বেইজিংয়ে সফররত স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে শি বলেন, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ঘটনায়) ভয় পাই না। গত ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চীনের উন্নয়নের মূল শক্তি ছিল আত্মবিশ্বাস এবং পরিশ্রম। কখনও আমরা অন্য কারো ওপর নির্ভর করিনি। অযৌক্তিক কোনো দমন-পীড়ন আমাদের দমাতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে এই যে একটি বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে, এতে কেউই বিজয়ী হবে না। বরং কেউ যদি বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে যায়, সে নিজেই একসময় বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।’
চলতি বছরের মার্চে প্রথমবারের মতো চীনের সব ধরনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর ২ এপ্রিল আরও এক ঘোষণা দিয়ে শুল্ক হার ৩৪ শতাংশে উন্নীত করেন তিনি।
চীনের পক্ষ থেকেও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ৩ এপ্রিল বেইজিং মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প এবং ৭ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক বার্তায় জানান, চীন যদি ৮ এপ্রিলের মধ্যে শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে এবং ৯ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হবে।
চীন ট্রাম্পের হুমকিতে সাড়া না দেওয়ায় ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয় বর্ধিত শুল্ক। এর ফলে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত মোট শুল্ক বেড়ে দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ৮ এপ্রিল বলেন, ‘ট্রাম্প যদি তার এই অপমানজনক শুল্ক নীতি চালিয়ে যান, তাহলে চীনও শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে।’
এরপর ৯ এপ্রিল চীন পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ১০ ও ১১ এপ্রিল, দুদিন ধরে ট্রাম্প আরও দুই দফায় চীনের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত মার্কিন শুল্কের হার দাঁড়িয়েছে ১৪৫ শতাংশে।