মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ক্লাউড কম্পিউটিং ও নজরদারি প্রযুক্তির মাধ্যমে সরাসরি সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে।
এ অভিযোগের প্রতিবাদে এবার কোম্পানিটির নিজস্ব কর্মীরাই মুখ খুলেছেন। যাদের মধ্যে ইবতিহাল আবৌসাদ ও ভানিয়া আগরওয়াল অন্যতম।
গার্ডিয়ান, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস মাধ্যমে জানা যায়, মাইক্রোসফটের ‘প্রজেক্ট অ্যাজুর’ নামে একটি উদ্যোগের মাধ্যমে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে প্রযুক্তিগতভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এতে ক্লাউড স্টোরেজ, এআই বিশ্লেষণ, মেশিন লার্নিং ও ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা ইসরায়েলের infamous (কুখ্যাত) সেনা ইউনিট ৮২০০, ৮১ এবং বিমান বাহিনীর ইউনিট ‘ওফেক’-এর দ্বারা ‘হত্যা তালিকা’ তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে।
আর এসব তথ্য ফাঁস হওয়ার পর এবার কর্মীদের উপর চটেছে মাইক্রোসফট কোম্পানি। ২৫ বছর বয়সী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইবতিহাল আবৌসাদ, যিনি মাইক্রোসফটের এআই বিভাগে কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারিনি আমি এমন এক কোডে কাজ করছি যা গণহত্যাকে সহায়তা করছে।’
গত ৪ এপ্রিল ‘মাইক্রোসফটের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন’ অনুষ্ঠানে সরাসরি প্রতিবাদ জানান ইবতিহাল আবৌসাদ ও তার সহকর্মী ভানিয়া আগরওয়াল। ওয়াশিংটনের রেডমন্ডে আয়োজিত ঐ অনুষ্ঠানে, তারা কোম্পানির প্রধানদের মুখোমুখি হয়ে সরাসরি এই গণহত্যার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন।
তারা কোম্পানিটির এআই বিভাগের সিইও মুস্তাফা সুলেমানের সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলেন, ‘লজ্জা তোমার, মুস্তাফা! মাইক্রোসফট ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে এআই অস্ত্র বিক্রি করছে। পঞ্চাশ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।’
এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই, মাইক্রোসফট দুজনকে তাদের কর্মক্ষেত্র থেকে বরখাস্ত করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে আবৌসাদ কটাক্ষ করে বলেন, ‘যে অনুষ্ঠানে আমাদের বরখাস্ত করা হলো, সেখানে মগ বিতরণ করা হচ্ছিল, যার ওপর লেখা ছিল— ‘মাইক্রোসফটে তোমার মনের কথা বলো’। কিন্তু যখন আমরা আমাদের মনের কথা বলি তখনই প্রতিশোধের মুখোমুখি হই।
এই অভিযোগ শুধু মাইক্রোসফটেই সীমাবদ্ধ নয়। গুগল এবং অ্যামাজনকেও ইসরায়েলের সঙ্গে ‘প্রজেক্ট নিম্বাস’ নামের একটি ১.২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ইসরায়েরি সেনাবাহিনীকে ক্লাউড ও এআই সেবা দেওয়ার অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে এইসব কোম্পানিকে।
গবেষকরা বলছেন, ‘এই টেক জায়ান্টদের প্রযুক্তি ফিলিস্তিনিদের ডেটা পয়েন্টে পরিণত করছে—যাদের অস্তিত্বই প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।’
আপনার মতামত লিখুন :