রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে সৌদি আরবের কঠোর বিরোধিতা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২৫, ০৯:২৫ এএম

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে সৌদি আরবের কঠোর বিরোধিতা

ছবিঃ সংগৃহিত

সৌদি আরব গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানচ্যুত করার যেকোনো প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) আন্তালিয়া ডিপ্লোম্যাসি ফোরামে গাজা কন্টাক্ট গ্রুপের বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান এই ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার যেকোনো প্রচেষ্টা বা পরিকল্পনাকে কোনো অবস্থাতেই গ্রহণ করি না।’ 

তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছায় স্থানান্তর শব্দটি ব্যবহার করাও গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ ফিলিস্তিনিদের মৌলিক মানবাধিকার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।

‘যখন একটি জনগোষ্ঠী তাদের মৌলিক জীবনধারণের উপকরণ থেকে বঞ্চিত থাকে, তখন ‘স্বেচ্ছায় স্থানান্তর’-এর কথা বলা ন্যায্য নয়,’-  প্রিন্স ফয়সাল।

যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত প্রস্তাব

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রিন্স ফয়সালের এই বক্তব্য আংশিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত প্রস্তাবের ও প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেখানে তিনি গাজার ২১ লাখ মানুষকে স্থানান্তর করে একটি রিভিয়েরা পর্যটন অঞ্চল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

যুদ্ধ পরিস্থিতি ও মানবিক সংকট

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করে। জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের চুক্তি ভেঙে ১৮ মার্চ ইসরায়েল আবার হামলা শুরু করে।
এখন পর্যন্ত গাজায় ৫০,৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজা শহর কার্যত বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি এবং বিচারে মানবিক সাহায্য প্রবেশের দাবি জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্ত

গত নভেম্বরেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

এছাড়াও, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে একটি মামলা গ্রহণ করেছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সৌদি আরবের এই অবস্থান শুধু মুসলিম বিশ্বের প্রতিক্রিয়া নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের একটি বড় বার্তা। যুদ্ধকবলিত গাজায় মানবিক সংকট দিন দিন আরও গভীর হচ্ছে। গাজা থেকে লোক উচ্ছেদ করে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়া বা তথাকথিত স্বেচ্ছা স্থানান্তর প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা আসলে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের শামিল।

আরবি/এসএস

Link copied!