সুদানের দারফুর অঞ্চলে সাম্প্রতিক হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জনের বেশি মানুষ, যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু এবং ৯ জন ত্রাণকর্মী রয়েছেন। জাতিসংঘ এই হামলার জন্য র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস ও তাদের মিত্রদের দায়ী করেছে। জাতিসংঘ এ ঘটনাকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
সুদানে জাতিসংঘের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারী ক্লেমেন্টাইন এনকভেটা-সালামি এক বিবৃতিতে বলেন, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ও শনিবার (১২ এপ্রিল) জামজাম ও আবু শউক অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ক্যাম্প এবং উত্তর দারফুরের এল-ফাশার শহরের আশপাশে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস ও সহযোগী যোদ্ধারা আক্রমণ চালায়। এসব হামলায় জামজাম ক্যাম্পে নয়জন ত্রাণকর্মী নিহত হন।
আক্রমণের শিকার হাসপাতাল, নিহত চিকিৎসকসহ রিলিফ কর্মীরা
সুদানের ডক্টরস ইউনিয়ন জানিয়েছে, শুক্রবার র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের হামলায় জামজাম ক্যাম্পের একটি হাসপাতালে রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের ছয়জন কর্মী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন চিকিৎসক মাহমুদ বাবের ইদ্রিস এবং সংস্থাটির স্থানীয় প্রধান অ্যাডাম বাবের আবদুল্লাহ। রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল পরে নিশ্চিত করে, হামলায় তাদের নয়জন কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।
বাস্তুচ্যুত মানুষের ওপর হামলা, মানবিক সংকট চরমে
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, কেবল জামজাম ও আবু শউক ক্যাম্পেই ৭ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে- যারা আগের সংঘর্ষে গৃহহীন হয়ে পড়েছিলেন। এনকভেটা-সালামি বলেন, ‘এই আক্রমণগুলো সুদানে দুই বছর ধরে চলমান সহিংসতার আরও এক ভয়াবহ দৃষ্টান্ত। এই বর্বরতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’
২৪ হাজারের বেশি নিহত, দুর্ভিক্ষে ধ্বংস হচ্ছে শিবির
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সুদানের গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২৪,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘ একে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মানবিক সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দারফুরের বিভিন্ন এলাকায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে, বিশেষ করে জামজাম ক্যাম্পে চরম খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট দেখা দিয়েছে।
আহ্বান: যুদ্ধবিরতি ও নিরাপদ ত্রাণ করিডোর
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা জরুরি যুদ্ধবিরতি এবং ত্রাণ সরবরাহের জন্য নিরাপদ করিডোর তৈরির আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে, ভবিষ্যতের গণহত্যা প্রতিরোধ এবং আক্রান্ত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা
আপনার মতামত লিখুন :