সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ০৯:১৮ পিএম

প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা নয়ছয়

পিএনবি কেলেঙ্কারির মামলায় হিরা ব্যবসায়ী মামা-ভাগ্নে গ্রেপ্তার

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ০৯:১৮ পিএম

পিএনবি কেলেঙ্কারির মামলায় হিরা ব্যবসায়ী মামা-ভাগ্নে গ্রেপ্তার

পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের (পিএনবি) অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন ভারতের হিরা ব্যবসায়ী মেহুল চোকসী। ভারত সরকারের অনুরোধে বেলজিয়াম সরকার তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

অভিযোগ, ১৩ হাজার ৮৫০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি করেছিলেন মেহুল। শুধু তিনি একাই নন, এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আরেক ব্যবসায়ী নীরব মোদী। সম্পর্কে তিনি মেহুলের ভাগ্নে। বেলজিয়ামে গ্রেপ্তারির পর মেহুলকে শীঘ্রই ভারতে প্রত্যর্পণ করা হবে বলেও খবর।

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে বেলজিয়ামের নাগরিকত্ব লাভ করে সেখানেই থাকতে শুরু করেন ‘গীতাঞ্জলি জেম্‌স’-এর কর্তা মেহুল। বেলজিয়ামে ছিলেন তার স্ত্রী প্রীতিও। ১২ এপ্রিল মেহুলকে হাসপাতাল থেকে আটক করা হয়। পরে গ্রেপ্তার দেখায় দেশটির পুলিশ।

মেহুলের গ্রেপ্তারির পরই আবার নতুন করে উস্কে দিয়েছে পিএনবি কেলেঙ্কারির ঘটনা। কীভাবে দুই ব্যবসায়ী এত বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটালেন? কীভাবে কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এলো? তারপর কীভাবে সকলের চোখে ধুলো দিয়ে ভারত ছাড়েন তারা? সেসব প্রশ্নই ঘুরছে।

২০১৮ সালে প্রথম পিএনবি কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এসেছিল। সেই মামলায় মেহুল, নীরব ছাড়াও নাম জড়ায় পিএনবি’র কিছু কর্মী ও কর্তার। শোরগোল পড়ে ভারতজুড়ে।

অভিযোগ ওঠে, ব্যাংকেরই কয়েকজন কর্মীর সাহায্যে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করেন নীরব ও তার মামা মেহুল। অপরাধটি হয়েছিল মুম্বাই কোর্টে অবস্থিত পিএনবি’র ব্র্যাডি হাউস শাখায়। সেখান থেকেই বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার নামে ভুয়া ‘লেটার অফ আন্ডারটেকিং (এলওইউ)’ জারি করে বিপুল ঋণ নেওয়া হয়েছিল! কোনও বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য ভারতীয় কোনও ব্যাংকের এলওইউ জারি করা প্রয়োজন ছিল।

তবে রিজ়ার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নিয়ম অনুযায়ী, নির্দেশিকা জারির পর থেকে ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়। তার মধ্যেই ঋণ শোধ করতে হয়। কিন্তু অভিযোগ, পিএনবি অনুমোদিত এলওইউ আরবিআইয়ের নিয়ম না মেনেই জারি করা হয়েছিল। সেখানে সময়ের উল্লেখ ছিল না। এমনকি, তদন্ত এড়াতে পিএনবি’র কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তথ্য নথিভুক্তও করা হয়নি।

জানা যায়, এই কারণে পিএনবি’র ৬ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ওই নথির ভিত্তিতে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক-সহ অন্যান্য ব্যাংকও ঋণ দিয়েছিল ওই দুই ব্যবসায়ীকে।

অভিযোগ, লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় পিএনবি’র কেন্দ্রীয় সিস্টেমে তোলাই হয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই কেলেঙ্কারি সম্পর্কে অন্ধকারেই ছিলেন। পিএনবি-র দাবি, ‘ডায়মন্ড আর ইউএস’, ‘মেসার্স সোলার এক্সপোর্টস’ এবং ‘মেসার্স স্টেলার ডায়মন্ডস’ নামে তিন সংস্থা তাদের বিদেশি সরবরাহকারীদের অর্থ প্রদানের জন্য ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

তখন ব্যাংক তাদের জানায়, এলওইউ জারি করার জন্য ‘গ্যারান্টি’র প্রয়োজন। কিন্তু ওই সংস্থাগুলো জানায়, অতীতেও তারা পিএনবি থেকে এলওইউ নিয়েছে এবং কোনও ‘গ্যারান্টি’র প্রয়োজন হয়নি।

বিষয়টি জানাজানি হতেই সন্দেহ হয় পিএনবি কর্তৃপক্ষের। তারা পুরনো সব নথি ঘেঁটে দেখেন ওই সংস্থাগুলোকে এমন কোনও এলওইউ জারিই করা হয়নি! তারপরই পিএনবি বিষয়টি আরবিআইকে জানায়। তদন্তে শুরু করে সিবিআই। ২০১৮ সালের ১৮ মে জানা যায়, কেলেঙ্কারি প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার।

তদন্তে ফাঁস হয় কেলেঙ্কারির ইতিহাস। পিএনবি’তে আর্থিক কেলেঙ্কারি শুরু হয় ২০১১ সালে। সেই বছর ১০ মার্চ নীরব পিএনবি থেকে প্রথম ভুয়া এলওইউ পান। পরবর্তী সময়ে আরও ১ হাজার ২১২টি এমন এলওইউ জারি করা হয়েছিল ওই ব্যবসায়ীকে। সেই সব ভুয়া এলওইউ থেকেই কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হয় বলে অভিযোগ।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ভারত ছেড়ে পালান নীরব। ২০১৮ সালের মে মাসে, সিবিআই এবং ইডি তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। জুন মাসে জানা যায়, নীরব ভারত থেকে পালিয়ে ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে মধ্য লন্ডন থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি।

পিএনবি কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার আগেই গোপনে দেশ ছাড়েন মেহুল। চিকিৎসার কারণে তিনি ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্র যান। তার পর আর ফেরেননি। দীর্ঘ দিন ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র অ্যান্টিগা ও বারবুডায় ছিলেন মেহুল। সেখানকার নাগরিকত্বও রয়েছে তার। ২০২১ সালে অ্যান্টিগা থেকে কিউবায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তবে ডোমিনিকায় তাকে আটক করা হয়। ফের তাকে অ্যান্টিগায় ফেরত পাঠানো হয়। তার মধ্যেই মেহুলের ক্যানসার ধরা পড়ে। জানা যায়, চিকিৎসার জন্য বেলজিয়ামে গিয়েছিলেন মেহুল।

পিএনবি জালিয়াতি মামলায় ইডি এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৩৬২ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। শুধু তা-ই নয়, তাইল্যান্ড, দুবাই, জাপান এবং আমেরিকার মতো দেশে মেহুলের মালিকাধীন বেশ কিছু সম্পত্তি ইতোমধ্যেই চিহ্নিত করেছে ইডি। সেগুলো বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। সেই আবহেই গ্রেপ্তার হলেন মেহুল।

আরবি/এসএমএ

Link copied!