ইসরায়েলের টানা বিমান হামলায় বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে প্রাণ হারানো ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৯৮৩।
আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ২৭৪ জনের বেশি মানুষ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা যায়, ধ্বংসস্তূপে এখনো বহু মানুষ চাপা পড়ে আছেন এবং উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতেই পারছেন না। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।
গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এই নতুন দফার হামলা কার্যত ১৯ জানুয়ারিতে ঘোষিত যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর করে দিয়েছে।
এর আগে যুদ্ধবিরতির ফলে গাজায় কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এলেও, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে আবারও শুরু হয় ভয়াবহ বোমাবর্ষণ। বিশেষ করে খান ইউনুস ও রাফাহ অঞ্চলে হামলার মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, যেখানে লক্ষাধিক বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলমান সংঘাতে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ভূখণ্ডটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মহলের আহ্বান সত্ত্বেও যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি সবকিছুরই যেন তীব্র সংকট চলছে।
গত বছর নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। এছাড়াও, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলাও চলছে।
এই চলমান আগ্রাসনকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ‘গণহত্যামূলক’ ও ‘মানবতাবিরোধী’ বলে আখ্যায়িত করছে।