স্পেনের সিভিল গার্ড এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে যারা অনলাইনের মাধ্যমে বিরল ও সংরক্ষিত প্রজাতির বন্য বিড়াল বিক্রি করছিলেন। এদের মধ্যে ছিল হোয়াইট টাইগার (সাদা বাঘ), পুমা এবং ক্লাউডেড লেপার্ডের মতো বিপন্ন প্রজাতি।
সিভিল গার্ড পুলিশ মায়োরকা দ্বীপে অবস্থিত ওই দম্পতির বাড়িতে অভিযান চালায়, যেখানে তারা বিরল জাতের বিড়াল পালন ও প্রজননের তথ্য পায়। এই বিড়ালগুলো পরে সামাজিক মাধ্যমে বিক্রি করা হতো।
উদ্ধার হওয়া প্রাণী
অভিযানে মোট ১৯টি বন্য বিড়াল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলোর মধ্যে ছিল:
# ১টি ক্যারাকাল
# ২টি সারভাল
# ১৬টি হাইব্রিড বিড়াল (বন্য ও গৃহপালিত বিড়ালের সংকর প্রজাতি)
আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের অংশ
সিভিল গার্ডের মতে, এই ঘটনা ‘একটি বৈশ্বিক অপরাধ চক্রের সূচনা বিন্দুমাত্র’। এই চক্রে প্রজননকারী, পরিবহণকারী ও পশু চিকিৎসকরাও জড়িত ছিল।
তাদের মতে, অধিকাংশ প্রাণী রাশিয়া, বেলারুশ ও ইউক্রেন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে পাচার করা হতো। চোরাচালানকারীরা পোল্যান্ড ও বেলারুশ সীমান্ত ব্যবহার করে প্রাণীগুলো ইউরোপে আনে এবং ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে এগুলো বৈধ দেখানো হতো।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ব্যবসা
দম্পতির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ছিল অত্যন্ত সক্রিয়। বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করত এ ধরনের প্রাণী কেনার জন্য। তারা আরও বিভিন্ন প্রাণী বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, যেমন- হায়েনা, মরুভূমির লিংক্স ও পুমা।
এমনকি একটি ক্লাউডেড লেপার্ড, যেটি হিমালয় অঞ্চলের স্থানীয় প্রাণী, ৬০,০০০ ইউরো (প্রায় ৭২ লাখ টাকা) দামে বিক্রির জন্য অনলাইনে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।
প্রাণীগুলোর ভবিষ্যৎ
উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলো আপাতত মায়োরকার সোন সার্ভারা সাফারি চিড়িয়াখানা-তে রাখা হয়েছে। পরে তাদেরকে আলিকান্তের কাছাকাছি একটি বন্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে পাঠানো হবে।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
আন্তর্জাতিক পশু কল্যাণ সংস্থার মতে, ইউরোপ বর্তমানে বিরল বন্যপ্রাণী পাচারের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমেও এই পাচারের চাহিদা বাড়ছে, কারণ অনেকে এই ধরনের প্রাণীকে অর্থ-সম্পদ বা মর্যাদার প্রতীক হিসেবে দেখে।
তবে এই ধরনের বন্য বিড়াল প্রচুর জায়গা ও বিশেষ যত্নের দাবি রাখে এবং অনেক সময় তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে, যা মানুষের বা অন্যান্য প্রাণীর জন্য হুমকি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মালিকেরা পরে তাদের ত্যাগ করে দেয়।