গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর করার আলোচনা আবারও অনিশ্চয়তায় পড়েছে। কারণ ইসরায়েল তাদের নতুন প্রস্তাবে হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের দাবি জানিয়েছে, যা হামাস সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইসরায়েলের প্রস্তাব শুধু সাময়িক ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলছে, যেখানে হামাসের কাছে থাকা ১১ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তির শর্ত রাখা হয়েছে।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে এবং যত দ্রুত সম্ভব উত্তর দেবে।
হামাসের অবস্থান: যুদ্ধ না থামা পর্যন্ত অস্ত্র ছাড়বে না
হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি আলজাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘নিরস্ত্রীকরণের দাবি তো শুনতেই অগ্রহণযোগ্য। এটি শুধু একটি লাল রেখা নয়, এটি লাখো কোটি লাল রেখা। কেউ যেন এটা স্বপ্নেও না দেখে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যতদিন দখলদারিত্ব থাকবে, ততদিন প্রতিরোধ চলবে।’
হামাস স্পষ্টভাবে বলেছে, তারা ইসরায়েলের কাছে যুদ্ধের স্থায়ী অবসান ও গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি ছাড়া কোনো সমঝোতায় যাবে না। এর পরিবর্তে তারা অবশিষ্ট সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে প্রস্তুত।
ইসরায়েলের ‘নতুন পরিকল্পনা’ নিয়ে সন্দেহ
আলজাজিরার প্রতিবেদক নূর ওদেহ বলেন, ‘ইসরায়েল যখন প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে জোরপূর্বক উৎখাতের পরিকল্পনা করছে, প্রতিরোধ পরিত্যাগ বা অস্ত্র জমা দেওয়ার কোনো আলোচনার বাস্তবতা নেই।’
তিনি জানান, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে এমন একটি বিভাগ গঠনের তথ্য এসেছে যার উদ্দেশ্য হলো গাজা থেকে ফিলিস্তিনি জনসংখ্যাকে বিতাড়িত করা।
মানবিক সংকট ও হতাহতের ভয়াবহ পরিসংখ্যান
# মার্চ ১৮ তারিখে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে পুনরায় আক্রমণ শুরু করে।
# গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৫০,৯৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১১৬,২৭৪ জন আহত হয়েছেন।
# গত কয়েক সপ্তাহে হাজার হাজার মানুষ আবার গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
# সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে গাজায় চরম খাদ্য সংকট ও অনাহার চলছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও প্রেক্ষাপট:
# হামাস: যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
# গাজার পরিস্থিতি: বর্তমানে এটি একটি ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘ এ পরিস্থিতিকে ‘মানবসৃষ্ট দুর্যোগ’ বলছে।
আপনার মতামত লিখুন :