তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে এনেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্কনীতি এবং চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক অর্থনীতির দুর্বল পারফরম্যান্স এ সিদ্ধান্তের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) প্রকাশিত ওপেকের মাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক তেলের দৈনিক চাহিদা ১.৩০ মিলিয়ন ব্যারেল বাড়বে এবং ২০২৬ সালে তা বাড়বে ১.২৮ মিলিয়ন ব্যারেল—যা পূর্ববর্তী পূর্বাভাসের তুলনায় প্রতিদিন ১.৫০ লাখ ব্যারেল কম।
ওপেকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত নতুন বাণিজ্য শুল্ক এবং ওপেক+ জোটের সম্ভাব্য উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনার কারণে তেলের বাজারে চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
এর ফলে, তেলের দাম কিছুটা কমেছে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির গতি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া সংস্থাটি বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও হ্রাস করেছে। ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধি ৩.০ শতাংশ থেকে সামান্য বাড়িয়ে ৩.১ শতাংশ করা হলেও, ২০২৪ সালের পূর্বাভাস ৩.২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
ওপেক জানায়, ‘বছরের শুরুতে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক ঘটনাপ্রবাহ স্বল্পমেয়াদি পূর্বাভাসে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।’
তবে এই পূর্বাভাসের তাৎক্ষণিক প্রভাব তেলের দামে তেমন দেখা না গেলেও দীর্ঘ মেয়াদে বিশ্ববাজারে এর প্রভাব স্পষ্ট হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
চলতি মাসে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে এবং বর্তমানে এর দাম ৬৬ ডলারের আশপাশে অবস্থান করছে।
তবে, বিপরীত বার্তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)। তারা ভিন্নমত পোষণ করে জানিয়েছে, চলতি দশকের মধ্যেই বৈশ্বিক তেলের চাহিদা সর্বোচ্চে পৌঁছাবে। এর কারণ, বিশ্ব ধীরে ধীরে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
সংস্থাটি মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) তাদের হালনাগাদ পূর্বাভাস প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, এ বছরের মার্চ মাসে ওপেক+ জোটের তেল উৎপাদন দৈনিক ৩৭ হাজার ব্যারেল কমে দাঁড়িয়েছে ৪১.০২ মিলিয়ন ব্যারেলে। নাইজেরিয়া ও ইরাকের উৎপাদন হ্রাস এর জন্য দায়ী হলেও, কাজাখস্তান নির্ধারিত কোটার চেয়ে বেশি উৎপাদন করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :