ঢাকা বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল হামাস

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ছবি : সংগৃহীত

হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের শর্তে ইসরায়েলের দেওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশর ও কাতার ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হামাসকে একটি নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে হামাস জানায়, প্রস্তাবটির অন্তত দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত গ্রহণযোগ্য নয়।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ফিলিস্তিনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির জন্য হামাসকে অস্ত্র পরিত্যাগের শর্ত দিয়েছিল দখলদার ইসরায়েল। কিন্তু প্রস্তাবে যুদ্ধ শেষ করার পরিকল্পনা বা ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি।

তবে হামাসের মূল দাবি, তাদের কাছে থাকা জীবিত জিম্মিদের অর্ধেককে মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা।

গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাক্ষাতের কয়েকদিন পর এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারী দেশ দুটির প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে হামাসের একটি প্রতিনিধি দল কায়রোতে মিশরীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করে।

জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ‘ইসরায়েলি প্রস্তাবে মিশরের মধ্য দিয়ে স্পষ্টভাবে হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধ শেষ করার বা গাজা থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রত্যাহার করার কোনও প্রতিশ্রুতিই দেয়নি তেল আবিব। তাই হামাস এই প্রস্তাব সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে।’

এটিই প্রথমবার যে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি এগিয়ে নেওয়ার শর্ত হিসেবে হামাসের নিরস্ত্রীকরণকে যুক্ত করেছে, যা সশস্ত্র গোষ্ঠীটির জন্য ‘লাল সংকেত’ বলে অভিহিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ফিলিস্তিনি এই কর্মকর্তা জিম্মিদের উদ্ধার করার চেষ্টার অজুহাতে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় ৫৯ জন জিম্মি রয়ে গেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছেন।

এদিকে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলছে, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার মানবিক পরিস্থিতি এখন সম্ভবত ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ’।

ছয় সপ্তাহ হয়ে গেল যখন ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ক্রসিং দিয়ে যেকোনো মানবিক সহায়তার সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছে। আর হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হলে এই অবরোধ আরও দীর্ঘ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

তবে নেতানিয়াহুর দাবি, সরবরাহ বন্ধের লক্ষ্য জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া এবং ১ মার্চ শেষে যুদ্ধবিরতি বাড়াতে হামাসকে চাপ দেওয়া।