দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত একটি কলেজে ক্লাসরুমের দেয়ালে গোবর লেপে দেয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ। কলেজটির অধ্যক্ষ প্রত্যুষ ভাটসালা নিজ হাতে গোবর লেপে দেন এবং সেটিকে গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে দাবি করেন।
রাজ্য সরকার পরিচালিত এই কলেজটি ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে অধ্যক্ষ কলেজের এক কর্মচারীর সহায়তায় কয়েকটি ক্লাসরুমের দেয়ালে গোবর প্রলেপ দেন। তিনি নিজেই সেই দৃশ্য ভিডিও করে কলেজের শিক্ষকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার করেন।
ভিডিওটি ভাইরাল হলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
এক শিক্ষক লেখেন, ‘কলেজের অধ্যক্ষ যদি এমন আজব কাজে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়তে কেন আসবে?’
আরেকজন কটাক্ষ করে লেখেন, ‘গোবর ঢুকেছে কলেজে, এবার গোমূত্রও আসবে কি?’
তবে সমালোচনার মাঝেও কেউ কেউ অধ্যক্ষের হাতে-কলমে অংশগ্রহণের প্রশংসা করেছেন।
অধ্যক্ষ প্রত্যুষ ভাটসালা বলেছেন, এই গোবর লেপন প্রাচীন ভারতীয় পদ্ধতি অনুসারে ক্লাসরুম ঠান্ডা রাখার গবেষণা প্রকল্পের অংশ। তার দাবি, ‘গোবরের প্রলেপ দেয়ালে তাপমাত্রা কমায়, যা পঠনপাঠনের জন্য সহায়ক।’
তিনি আরও জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো গবেষণা সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
অধ্যক্ষের যুক্তি মানতে রাজি নন বহু শিক্ষার্থী।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট ইউনিয়নের (ডিইউএসইউ) প্রেসিডেন্ট রৌণক ক্ষেত্রী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে অধ্যক্ষের কক্ষে এবং বাথরুমে পাল্টা গোবর লেপে দেন।
ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রৌণক নিজেই প্রিন্সিপালের অফিসের দেয়ালে গোবর প্রলেপ দিচ্ছেন।
ক্ষেত্রী বলেন, ‘এই কর্মকাণ্ড ইউজিসি নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন।’ তিনি জানান, তাদের আইনি দল ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে।
পাশাপাশি তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে শ্রেণীকক্ষে এয়ার কন্ডিশনার স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন, যাতে তাপমাত্রা কমানোর জন্য আর এমন `অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি` ব্যবহার না করতে হয়।
বিতর্ক অব্যাহত:
এই ঘটনা নিয়ে ভারতের শিক্ষা মহল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই এটিকে পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ হিসেবে দেখলেও, অধিকাংশই একে প্রহসন ও শিক্ষার পরিবেশের অবমাননা বলে আখ্যায়িত করছেন।
সূত্র: দ্য মিন্ট ও দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস