ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

মুর্শিদাবাদের সহিংসতায় ‘বাংলাদেশ জড়িত’ নিয়ে কী বললেন মমতা

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম
ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে বিতর্কিত ওয়াকফ আইন নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের কথা একাধিকবার টেনে এনেছেন ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) পশ্চিমবঙ্গের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের এক সভায় ভাষণ দেন তিনি।

এ সময় কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না? আপনি ইউনূসের সঙ্গে গোপন মিটিং করুন, চুক্তি করুন। দেশের ভালো হলে খুশি হবো। কিন্তু আপনাদের প্ল্যানিংটা কী? কোনো এজেন্সির মাধ্যমে ওখান থেকে লোক নিয়ে এসে দাঙ্গা করা?’

মুখ্যমন্ত্রীর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ভাষণের যে লাইভ দেখানো হয়েছে, সেখানেই এই প্রসঙ্গগুলো আছে।

সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলের একটি পোস্টের প্রসঙ্গে মমতা ব্যানার্জী বলেন, ‘কাল আমি এএনআই-এর একটি টুইট দেখেছি, হোম মিনিস্ট্রির সোর্স কোট করে বলেছে যে- ইসমে বাংলাদেশ কা হাথ হ্যায়।’

মমতা ব্যানার্জীর বক্তব্যের শেষ অংশটি হিন্দিতে, যার অর্থ হলো- ‘এতে বাংলাদেশের হাত আছে’।

এর পরেই তিনি বলেন, যদি এই সহিংসতায় বাংলাদেশের হাত থাকে, তাহলে তার দায় তো কেন্দ্র সরকারের। সীমান্ত সামলানোর দায়িত্ব বিএসএফের। রাজ্যের হাত নেই এতে।

মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতা এবং বিএসএফের দায় নিয়ে এই একই কথা ভাষণের শেষ দিকে আরও একবার বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা অ্যালাউ করলেন কেন? বিজেপির লোক কীভাবে বাইরে থেকে এসে গণ্ডগোল পাকিয়ে পালিয়ে গেল?’

এদিনের ভাষণে মমতা ব্যানার্জী একাধিকবার এই মন্তব্যও করেছেন যে মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ‘বিজেপির পরিকল্পনা’। তার কথায়, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে পূর্ব পরিকল্পিত দাঙ্গা। আমিও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাচ্ছি। বাইরে থেকে গুণ্ডা নিয়ে আসার পরিকল্পনাটা বিজেপির। প্রথমে ওদের পরিকল্পনা ছিল রাম-নবমীর দিনের। কিন্তু আপনারা সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছেন।’

কলকাতার বৈঠকে হাজির ইমাম-মুয়াজ্জিনদের উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা শান্ত থাকুন। বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না। ইমামদের একটা ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি কিন্তু খুঁজে বার করব সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কাকে কাকে হাত করেছে এবং কিছু বাচ্চা ছেলেকে পাঁচ-ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে ইঁট ছুঁড়িয়েছে।’

মমতা ব্যানার্জীর তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

উল্লেখ্য, ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওয়াকফ আইনের সংশোধনি নিয়ে প্রথম দফায় গত মঙ্গল ও বুধবার এবং দ্বিতীয় দফায় শুক্র ও শনিবার বাংলাদেশে সীমান্তবর্তী সুতি ও সামশেরগঞ্জ এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়েছিল। ওই সহিংসতার জেরে শনিবার তিনজনের মৃ্ত্যু হয়েছিল – যাদের দুজন হিন্দু ও একজন মুসলমান বলে রাজ্য পুলিশ জানায়।