শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ০১:৫১ পিএম

হিন্দু এনডাওমেন্ট বোর্ডে নেই মুসলিম, তবে ওয়াক্ফ বোর্ডে হিন্দু কেন?

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ০১:৫১ পিএম

হিন্দু এনডাওমেন্ট বোর্ডে নেই মুসলিম, তবে ওয়াক্ফ বোর্ডে হিন্দু কেন?

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রণীত ওয়াক্ফ (সংশোধনী) আইন নিয়ে তীব্র বিতর্কে জড়িয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ধর্ম, সম্পত্তি ও সংবিধানিক অধিকার ঘিরে দায়ের হওয়া ৭৩টি পিটিশনের শুনানিতে আদালত কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে- যদি হিন্দু এনডাওমেন্ট বোর্ডে কোনো মুসলিম সদস্য না থাকেন, তবে ওয়াক্ফ বোর্ডে হিন্দু সদস্য থাকা উচিত কেন?   

বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না‍‍র নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই প্রশ্ন তোলেন, যা দেশজুড়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করে।  

ধর্মীয় বোর্ডে ‘পক্ষপাত’ প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের উদ্বেগ  

বিচারপতিরা স্পষ্ট করেন, ধর্মভিত্তিক বোর্ডগুলোর গঠনে ভারসাম্য ও ন্যায্যতা থাকা উচিত। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ওয়াক্ফ আইন নিয়ে দেশে নানা জায়গায় সহিংসতা হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় বোর্ডে অমুসলিম সদস্য রাখা বা ‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ ধারণার পরিবর্তন নিয়ে কেন্দ্রের কাছ থেকে যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা দরকার।’

কী এই ওয়াক্ফ বাই ইউজার?  

এটি একটি ধর্মীয় রীতি, যেখানে দীর্ঘদিন কোনো জমি মসজিদ, কবরস্থান বা মাদ্রাসা হিসেবে ব্যবহৃত হলে, কাগজপত্র ছাড়াও তাকে ওয়াক্ফ সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু নতুন আইনে বলা হয়েছে, শুধু দলিল থাকা জমিই ওয়াক্ফ হিসেবে বিবেচিত হবে, যা বহু ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করছে।  

পিটিশনকারীদের যুক্তি  

বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিবাল আদালতে বলেন, ‘ওয়াক্ফ কেবল জমি নয়, এটা ইসলামের ধর্মীয় ঐতিহ্য। বহু পুরোনো জমির দলিল না থাকলেও তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, ওয়াক্ফ বোর্ডে জেলা প্রশাসক (সরকারি প্রতিনিধি) থাকার ফলে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।  

অভিষেক মনু সিংভি জানান, ভারতে আনুমানিক ৮ লাখ ওয়াক্ফ সম্পত্তির মধ্যে প্রায় অর্ধেকই দলিলবিহীন, যেগুলো “ওয়াক্ফ বাই ইউজার”-এর আওতাভুক্ত। নতুন আইন অনুসারে এসব জমি রাষ্ট্রের দখলে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।  

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ: ইতিহাস উপেক্ষা নয়  

প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, ‘আমরা শুনেছি, দিল্লি হাইকোর্ট পর্যন্ত ওয়াকফ জমির ওপর গড়া। তাহলে বলা যায় না, ব্যবহারভিত্তিক জমি সবসময় মিথ্যা।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৩ বা ১৪ শতকে গড়া মসজিদের দলিল এখন পাওয়া কঠিন, কিন্তু তাতে ঐতিহাসিক বাস্তবতাকে বাতিল করা যায় না।’

ধর্মনিরপেক্ষতার পরীক্ষায় ভারতীয় সংবিধান  

এই মামলা শুধু ওয়াক্ফ আইনের বৈধতা নয়, বরং ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র ও সংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষার প্রশ্নেও এক নজির হয়ে উঠেছে।  
সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে, ধর্মীয় বোর্ডে প্রতিনিধিত্ব, সম্পত্তির মালিকানা ও আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে পরিষ্কার ও যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা দিতে হবে।  

পরবর্তী শুনানিতে এই বিষয়ে চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণ দিতে পারে আদালত, যা ভবিষ্যতের ধর্মীয় সম্পত্তি আইন ও ধর্মনিরপেক্ষ নীতির রূপরেখা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।  

আরবি/এসএস

Link copied!