ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’-এর অনুপ্রেরণায়, এই সিস্টেমের মাধ্যমে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করে তা আকাশেই ধ্বংস করা হবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরইমধ্যে নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন- তৈরি হবে গোল্ডেন ডোম, আর সেই কাজ পেতে দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স।
কারা কারা প্রতিযোগিতায়?
রয়টার্সের তথ্য বলছে, শুধু স্পেসএক্স নয়, এই প্রকল্পে প্রতিদ্বন্দ্বী আরও দুই প্রতিষ্ঠান- ড্রোন নির্মাতা অ্যান্ডুরিল এবং সফটওয়্যার জায়ান্ট প্যালান্টিয়ার। তিন প্রতিষ্ঠান প্রধানই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ও রাজনৈতিক সমর্থক।
ইলন মাস্ক শুধু যে বড় অঙ্কের অনুদান দিয়েছেন, তাই নয়- তিনি এখন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন।
স্যাটেলাইটের বাহিনী, লেজার হামলার প্রস্তুতি
গোল্ডেন ডোমের পরিকল্পনায় রয়েছে বিশাল স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক। সূত্র বলছে, ৪০০ থেকে ১,০০০-এর বেশি স্যাটেলাইট কক্ষপথে স্থাপন করা হতে পারে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবিধি নজরদারিতে।
শুধু প্রতিরক্ষা নয়, পাল্টা আক্রমণের জন্যও কক্ষপথে বসানো হবে আলাদা ২০০টি স্যাটেলাইট, যেগুলোতে থাকবে ক্ষেপণাস্ত্র বা লেজার অস্ত্র! তবে অস্ত্রবাহী স্যাটেলাইটের কাজে স্পেসএক্সকে জড়ানো হবে না- এমনটাই আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকার হবে গ্রাহক, মালিক নয়?
স্পেসএক্স-এর প্রস্তাব অনুযায়ী, গোল্ডেন ডোম তৈরি হলে তা ব্যবহার করতে মার্কিন সরকারকে গ্রাহক হতে হবে। অর্থাৎ সরকার অর্থ দিয়ে সিস্টেম ব্যবহার করবে, কিন্তু মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ স্পেসএক্সের হাতে থাকবে- এই মডেল নিয়ে ইতোমধ্যেই পেন্টাগনের ভেতরে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
পেন্টাগনের একাংশ বলছে, এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকা অস্বাভাবিক ও বিপজ্জনক।
মালিকানা নিয়ে বিতর্ক
এই প্রতিরক্ষা ঢাল স্পেসএক্স-এর মালিকানায় থাকবে, না কি সরকার এটি পরিচালনা করবে—এ নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
তিনটি মডেল বিবেচনায় আছে:
# স্পেসএক্স মালিক ও অপারেটর
# সরকার মালিক, কিন্তু বেসরকারি অপারেটর থাকবে
# সরকার সম্পূর্ণভাবে মালিক ও পরিচালনাকারী
আগ্রহী আরও ১৮০ কোম্পানি
এ পর্যন্ত পেন্টাগনের কাছে গোল্ডেন ডোম প্রকল্পে অংশ নিতে ১৮০টির বেশি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে এপিরাস, উরসা মেজর, আর্মাডারসহ একাধিক প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। কেউ কেউ এরই মধ্যে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের কাছে নিজেদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে।
গোল্ডেন ডোম নিয়ে স্পেসএক্স, প্যালান্টিয়ার, অ্যান্ডুরিল কিংবা হোয়াইট হাউসের কেউ এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
পেন্টাগন বলেছে, তারা হোয়াইট হাউসের নীতিমালার আলোকে প্রার্থী তালিকা তৈরি করছে- চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই।
ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’ সিস্টেমে ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করে আকাশেই ধ্বংস করা হয়। ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় এমন একটি সিস্টেম যুক্তরাষ্ট্রেও গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এখন সেই প্রতিশ্রুতি রূপ নিচ্ছে বাস্তবে- ‘গোল্ডেন ডোম’-এর মাধ্যমে।