সৌদি-ইরান সম্পর্কে নতুন মোড়

সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান গত বৃহস্পতিবার তেহরান সফরে গেছেন। যা একজন জ্যেষ্ঠ সৌদি রাজপরিবারের ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরল সফর। ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড ক্রপসের (আইআরজিসি) প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরির সাথে দেখা করেছেন তিনি। খবর ইরানি সংবাদমাধ্যম আইএসএনএ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা জোরদার করতে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে মুসলিম দুই দেশ ঐকমত্য হয়েছে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় দুই জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার মধ্যে ‘সন্তোষজনক’ আলোচনা হয়েছে।

কয়েক দশক পর সৌদি রাজপরিবারের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য ইরান সফর করলেন। এর আগে ১৯৯৭ সালে সৌদি বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ তেহরান সফর করেছিলেন। প্রিন্স খালিদ তার ছেলে।

মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি জান্তা ও বিরোধীরা

বিস্তারিত পড়ুন

সৌদি-ইরানের এই বৈঠক এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হলো যখন তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য আলোচনায় ব্যস্ত। যদি আলোচনা ব্যর্থ হয় তাহলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর হুমকি দিচ্ছে মার্কিন-ইসরায়েল। সৌদি আরব ও ইরানের প্রতিবেশী উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোতে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে ওয়াশিংটন।

অবশ্য ইরানও সতর্ক করে দিয়েছে বলেছে, তাদের ভূখণ্ডে যেকোনো আক্রমণ বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের সূত্রপাত করতে পারে।

বৈঠকের আগে রাষ্ট্রীয় সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, দুই কর্মকর্তা ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং সাধারণ স্বার্থের বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন’।

সৌদি আরবে আইআরজিসি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত।

২০১৬ সালে রিয়াদে একজন শিয়া ধর্মগুরুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তেহরানে থাকা সৌদি দূতাবাসে হামলা চালায় ইরানের বিক্ষোভকারীরা। এরপর রিয়াদ তেহরানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। এরপর দেশ দুটি প্রতিবেশী ইয়েমেন নিয়ে বছরের পর বছর প্রক্সি যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় দুই বছর আগে দু’দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ হতে শুরু করে।

অনলাইনে বিজ্ঞাপন ব্যবসায় গুগলের একাধিপত্য অবৈধ: যুক্তরাষ্ট্র

বিস্তারিত পড়ুন

ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছে সৌদি আরবসহ অন্যান্য উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলো।

গত বছর ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে পর উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলো ইরানের তেল স্থাপনাগুলোতে তেল আবিবের সম্ভাব্য আক্রমণ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। ইরান প্রকাশ্যে সতর্ক করে দিয়েছিল, ইসরায়েলকে সহায়তাকারী যেকোনো পক্ষকে আক্রমণকারী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

বিষয়টি সম্পর্কে অবগত সূত্রগুলো সেসময়ে সিএনএন’কে জানিয়েছিল, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, তারা ইরানে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলকে তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য বলছে, গত বছরের অক্টোবরে সৌদি আরব ও ইরান ওমান উপসাগরে প্রথম যৌথ নৌ মহড়া করেছিল। এবং নভেম্বরে সৌদি আরবের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ফায়াদ আল-রুওয়াইলি তেহরান সফর করেন।