ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

তেলআবিবে হুথিদের হামলা

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ০৯:৫২ এএম
তেলআবিবের উপকণ্ঠে জাফায় ইরানি প্রযুক্তিনির্ভর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হুথিরা। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আগুনে এবার নতুন ঘি ঢেলেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। 

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবের উপকণ্ঠে জাফা অঞ্চলে ‘জুলফিকার’ নামক একটি ইরানি প্রযুক্তিনির্ভর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হুথিরা।  

মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনের উপকূলীয় হুদায়দা শহরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এলাকায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই এ হামলা চালানো হয়। মার্কিন বাহিনীর হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হন।  

ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে জানান, ‘এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের বেনগুরিয়ন বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি সামরিক স্থাপনা।’

একইসঙ্গে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের দুটি রণতরীকে লক্ষ্য করে সম্মিলিত হামলার অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়।  

ইয়েমেনি প্রতিরক্ষা বাহিনী আরও দাবি করেছে, তারা সানা প্রদেশের আকাশসীমায় একটি মার্কিন এমকিউ-৯ ড্রোন সফলভাবে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এই ড্রোনটি যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে গুপ্ত নজরদারি ও সামরিক অভিযানের কাজে ব্যবহার করে থাকে।  

বিশ্লেষকদের মতে, হুথিদের এই সরাসরি আঘাত কেবল সামরিক বার্তা নয়, এটি কূটনৈতিক দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। ইসরায়েলের সর্বাধিক সুরক্ষিত অঞ্চলের একেবারে পাশে আঘাত হানায় গোটা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।  

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ইরানি প্রযুক্তির ‘জুলফিকার’ ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ইয়েমেন থেকে সরাসরি ইসরায়েলে হামলার ঘটনা শুধু ইসরায়েল-ইরান বৈরিতার গভীরতা প্রকাশ করে না, বরং এটি ইঙ্গিত দেয় যে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত এখন এক ভয়াবহ আঞ্চলিক রূপ নিতে চলেছে।  

এদিকে এখনো ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই হামলা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, যদি এই হামলা নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানে, তাহলে ইসরায়েল বাধ্য হবে তার কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে।  

হুথি বাহিনীর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন অব্যাহত রাখে, তাহলে প্রতিরোধও হবে আরও তীব্র। সেই প্রতিরোধের ঢেউ কেবল ইয়েমেনেই নয়, ছড়িয়ে পড়বে পুরো অঞ্চলে।’

এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রভাব শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং তা কূটনৈতিক আলোচনাকেও উত্তপ্ত করে তুলবে। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল, অন্যদিকে ইয়েমেন ও ইরান- এই সমীকরণ ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।  

‘জুলফিকার’ ক্ষেপণাস্ত্র যেন আকাশের মধ্য দিয়ে একটি বার্তা পাঠিয়েছে- যখন কথায় কাজ হয় না, তখন প্রতিরোধ আসে বিস্ফোরণের ভাষায়। আর সেই বার্তা এখন বিশ্বের সব ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের দরজায় কড়া নাড়ছে।  

সূত্র: আলজাজিরা