রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণা করে জানান, রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সাময়িকভাবে সব ধরনের সামরিক অভিযান বন্ধ রাখবে। এই যুদ্ধবিরতি স্থানীয় সময় রোববার রাত ১০টা (মস্কো সময় মধ্যরাত) পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানান তিনি।
তিনি শনিবার (১৯ এপ্রিল) যুদ্ধবিরতির এ ঘোষণা দেন।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হলেও বাস্তবে হামলা থামেনি। তিনি বলেন, ‘যদি রাশিয়া সত্যিকারের নীরবতা বজায় রাখতে চায়, ইউক্রেন তাও করবে। আমাদের প্রতিক্রিয়া হবে সম্পূর্ণ প্রতিসম।’
জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়ার কুর্স্ক ও বেলগোরোদ অঞ্চলে এখনো লড়াই চলছে এবং রুশ ড্রোন ব্যবহারও অব্যাহত আছে, যদিও কিছু এলাকায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত।
তিনি জানান, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের পূর্ণ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আগেই গ্রহণ করেছে এবং ২০ এপ্রিলের পরও যুদ্ধবিরতি বাড়াতে প্রস্তুত রয়েছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আন্দ্রিয় সিবিহা বলেন, ‘পুতিন একদিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলছেন, অথচ আলোচনায় ছিল ৩০ দিনের বিরতি। পুতিনের কথার সঙ্গে কাজের মিল নেই- আমরা শুধু কথায় নয়, কাজে বিশ্বাস করি।’
পুতিন জানান, এই যুদ্ধবিরতি ‘মানবিক বিবেচনায়’ দেওয়া হয়েছে, এবং তিনি আশা করছেন ইউক্রেনও এই বিরতিতে অংশ নেবে। তবে রুশ সেনাদের ‘যেকোনো ধরনের উসকানি ও লঙ্ঘনের’ জবাব দিতে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির শর্ত একে অপরের দ্বারা সম্মানিত হলেই তা কার্যকর থাকবে।
এর আগেও ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে অর্থোডক্স ক্রিসমাস উপলক্ষে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা ব্যর্থ হয়, কারণ উভয় পক্ষ একমত হতে পারেনি।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘পুতিন যদি সত্যিই শান্তি চান, তাহলে পুরো আগ্রাসন বন্ধ করে পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিন- শুধু এক দিনের জন্য নয়।’
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন চালায়। এরপর থেকে যুদ্ধ চলমান এবং উভয় পক্ষের বহু সেনা নিহত বা আহত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও গত মাসে মস্কো তা প্রত্যাখ্যান করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে দ্রুত অগ্রগতি না হলে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার প্রচেষ্টা থেকে সরে আসবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুত- দিন কয়েকের মধ্যে- জেনে নিতে চাই এটা সম্ভব কি না। যদি না হয়, তবে আমরা অন্যকিছুর দিকে মনোযোগ দেব।’
আপনার মতামত লিখুন :