সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ০৯:৪৬ এএম

গাজায় চিকিৎসাকর্মীদের হত্যাকাণ্ড আইডিএফের ‘পেশাগত ব্যর্থতা’

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ০৯:৪৬ এএম

গাজায় চিকিৎসাকর্মীদের হত্যাকাণ্ড আইডিএফের ‘পেশাগত ব্যর্থতা’

৩১ মার্চ, ২০২৫ রাফায় উদ্ধার হওয়া ৮ জন রেড ক্রিসেন্টের জরুরি সেবাদানকারীদের মৃতদেহ ঘিরে শোকার্ত মানুষ ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় গত মাসে ১৫ জন জরুরি সেবাকর্মীর নিহত হওয়ার ঘটনাটি ‘পেশাগত ব্যর্থতা’র কারণে ঘটেছে। 

ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্তে একাধিক ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে ছিল ‘অভিযানগত ভুল বোঝাবুঝি’ এবং ‘নির্দেশ লঙ্ঘন’। সংশ্লিষ্ট ইউনিটের উপ-কমান্ডারকে বরখাস্ত করা হয়েছে কারণ তিনি তদন্ত প্রতিবেদনে ‘অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর তথ্য’ দিয়েছেন।

ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সংস্থার (পিআরসিএস) এক নারী মুখপাত্র জানান, এই তদন্ত প্রতিবেদন ‘অগ্রহণযোগ্য’, কারণ এটি দায়ভার কেবল মাঠপর্যায়ের কমান্ডারের ওপর চাপিয়ে মূল সত্যকে এড়িয়ে গেছে।

গত ২৩ মার্চ গাজায় পিআরসিএস-এর অ্যাম্বুলেন্স বহর, জাতিসংঘের একটি গাড়ি এবং একটি দমকল বাহিনীর গাড়ি ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিবর্ষণের শিকার হলে ১৪ জন জরুরি সেবাকর্মী এবং একজন জাতিসংঘ কর্মী নিহত হন।

আইডিএফ তাদের বিবৃতিতে দাবি করেছে, তাদের সৈন্যরা ভেবেছিল তারা শত্রুপক্ষের হুমকির সম্মুখীন, তাই গুলি চালানো হয়েছিল।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ছয়জন হামাসের সদস্য ছিল- যদিও কোনো তাৎক্ষণিক প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি- এবং ঘটনাস্থলে কোনো ধরনের তাৎক্ষণিক মৃত্যুদণ্ড বা গুলি করে হত্যা হয়নি বলে দাবি করা হয়।

তদন্তকারী মেজর জেনারেল ইয়োয়াভ হার-এভেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইসরায়েলি বাহিনীর বিশ্বাস, ছয়জন সেবাকর্মী হামাসের সক্রিয় সদস্য এবং পরে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল ‘বিপজ্জনক ও সংঘাতপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রে’, যেখানে এক কমান্ডার তাৎক্ষণিকভাবে একে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করেন, কারণ গাড়িগুলো দ্রুতগতিতে সামনে আসছিল।

রাতের কম আলো ও দৃশ্যমানতা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে বলে জানায় আইডিএফ। এতে করে অ্যাম্বুলেন্স চেনার সুযোগ ছিল না।

আরও বলা হয়, আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ‘তীব্র তিরস্কারের’ মুখোমুখি হবেন, কারণ তিনি পুরো ঘটনার জন্য আংশিকভাবে দায়ী।

প্রথমদিকে ইসরায়েল বলেছিল, গাড়িগুলো ‘অস্বাভাবিকভাবে’ আলো ছাড়া এগিয়ে আসছিল এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে পূর্ব সমন্বয় ছাড়াই চলছিল। তবে পরে এই দাবি প্রত্যাহার করা হয়, কারণ নিহত এক প্যারামেডিকের মোবাইলে পাওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, গাড়িগুলোর সামনে ও পেছনে আলো জ্বলছিল এবং জরুরি সংকেতও চালু ছিল।

ভিডিওতে দেখা যায়, গাড়িগুলো সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকার সময় ভোরের আগে গুলি শুরু হয়। ভিডিওতে একজন চিকিৎসাকর্মী শেষ প্রার্থনা করছেন, এরপর শোনা যায় ইসরায়েলি সেনাদের কণ্ঠস্বর, তারা গাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে।

ভিডিওতে পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে, গাড়িগুলো জরুরি পরিষেবার চিহ্নযুক্ত এবং প্যারামেডিকরা প্রতিফলকযুক্ত উজ্জ্বল পোশাক পরিধান করেছিলেন।

নিহত ১৫ জনের মরদেহ বালির নিচে পুঁতে রাখা হয়। এক সপ্তাহ পর জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নিরাপদ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

আইডিএফ আরও নিশ্চিত করেছে, তারা এই ঘটনার পর পিআরসিএস-এর এক চিকিৎসাকর্মীকে আটক করেছে। যদিও তার নাম প্রকাশ করা হয়নি, আগেই আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি তার নাম প্রকাশ করেছিল আসাদ আল-নাসাসরা।

রেড ক্রিসেন্ট ও একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এই ঘটনার স্বাধীন তদন্ত দাবি করেছে।

আইডিএফ এর আগে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে সাতজন সাহায্যকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় দুইজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও কয়েকজনকে শাস্তি দিয়েছিল।

২০২৪ সালের মে মাসে ইসরায়েল রাফাহ শহরে প্রথম বড় আকারের অভিযান চালায়, যার ফলে শহরের বিশাল অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সাম্প্রতিক দুই মাসের অস্ত্রবিরতির সময় হাজার হাজার মানুষ সেখানে ফিরে যান।

ইসরায়েল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার জবাবে গাজায় হামাস নির্মূল অভিযানের ঘোষণা দেয়, যেখানে প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এরপর থেকে গাজায় কমপক্ষে ৫১,২০১ জন মানুষ নিহত হয়েছেন।

আরবি/এসএস

Link copied!