‘শ্রমিকদের নিরাপত্তা’ এবং ‘রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার’ কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশে রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি রুপির অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত।
রোববার (২০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত হওয়ায় তিনটি চলমান প্রকল্পের কাজ এবং পাঁচটি আলাদা জায়গায় জরিপের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের রেলপথের মাধ্যমে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে (সেভেন সিস্টার্স) যুক্ত করার পরিকল্পনায় আপাতত ভাটা পড়ল।
বাংলাদেশে নিজেদের রেল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের পরিবর্তে নয়াদিল্লি এই অর্থ দিয়ে উত্তর ভারতের রেলপথ অবকাঠামো উন্নত করছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশকে এড়িয়ে নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করার ব্যাপারে ভাবছে দেশটি।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার কোটি রুপির রেল সংযোগ প্রকল্পের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে ভারত সরকার।
দ্য হিন্দু জানিয়েছে, স্থগিত করা এই প্রকল্পগুলো ভারতের ‘স্থলবেষ্টিত’ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে বাংলাদেশের মাধ্যমে যুক্ত করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
উল্লেখ্য, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল সরু শিলিগুড়ি করিডরের (চিকেন নেক করিডর) ওপর থেকে নির্ভরতা কমানো, যেটি ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করার একমাত্র পথ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো নির্মাণ বা অন্য উপকরণ আমরা পাঠাচ্ছি না। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সংযোগ রুটের অর্থায়ন বন্ধ আছে।
প্রকল্প আবার শুরু করতে প্রথমে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারত অংশে প্রকল্পের কাজ চলমান।’
প্রতিবেদন মতে, ভারতের সহযোগিতায় নির্মাণাধীন তিনটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে আখাউড়া-আগরতলা ক্রস-বর্ডার রেল সংযোগ এবং খুলাবুড়া-শাহবাজপুর রেললাইন, খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন এবং ঢাকা-টঙ্গি-জয়দেবপুর রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প।
আখাউড়া-আগরতলা (ত্রিপুরা) ক্রস-বর্ডার রেল সংযোগ প্রকল্প ভারত সরকারের ৪০০ কোটি রুপি সহায়তায় করা হচ্ছিল। এই রেল সংযোগের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। যার ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেললাইন বাংলাদেশে।
আর ত্রিপুরায় ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার। খুলাবুড়া-শাহজাদপুর রেললাইন এই প্রকল্পের অংশ। এটির লক্ষ্য ছিল নতুন রেললাইন নির্মাণ ও পুরোনো লাইনের মাধ্যমে আসামের সঙ্গে সংযোগ উন্নত করা।
সূত্র : দ্য হিন্দু