মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন যে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে একটি শান্তিচুক্তি এই সপ্তাহের মধ্যেই সম্পাদিত হতে পারে। একইসঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি আলোচনায় অগ্রগতি না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র তার মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা থেকে সরে আসবে।
রোববার (২০ এপ্রিল) মার্কিন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প লেখেন, ‘আশা করছি রাশিয়া এবং ইউক্রেন এই সপ্তাহেই একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে। এরপর উভয় দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যাপক ব্যবসা শুরু করবে এবং বিপুল অর্থ উপার্জন করবে।’
ট্রাম্পের সংক্ষিপ্ত এই বার্তাটি ছিল বলিষ্ঠ, যদিও লেখায় বানান ভুল ছিল। তা সত্ত্বেও এতে তার কূটনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ে অধৈর্যতা এবং আলোচনার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রতি আগ্রহ স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
চুক্তির সম্ভাব্য বিষয়বস্তু
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, আলোচনায় একটি খসড়া চুক্তি তৈরি হয়েছে, যেখানে যুদ্ধবিরতি এবং ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণকে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে এসব বিষয়ে এখনো উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র মতানৈক্য রয়ে গেছে।
আলোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। তারা বেশ কয়েক দফা রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
কূটনৈতিক চাপ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এ ধরনের মন্তব্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর অবিলম্বে সমঝোতায় পৌঁছানোর চাপ তৈরি করছে। তবে এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগও তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে যদি শান্তিচুক্তিতে ক্রিমিয়ার বৈধতা স্বীকার করা হয়, যা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হতে পারে।
অনেকে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি মধ্যস্থতা থেকে সরে আসে, তাহলে আলোচনার ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে।
বাণিজ্যিক সুযোগের ইঙ্গিত
শান্তিচুক্তির পর রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার যে সম্ভাবনার কথা ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন, তা যুদ্ধ-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং বিদেশি বিনিয়োগের আকর্ষণ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
তবে সমালোচকরা মনে করছেন, এই অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ মানবিক সংকট, যুদ্ধাপরাধ ও ক্ষয়ক্ষতির বাস্তবতাকে গৌণ করে ফেলছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন রাশিয়া ইউক্রেনের ভূখণ্ডে আক্রমণ চালায়। এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে আসছে এবং রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :