২০০ কোটি ডলারের অনুদান বন্ধ করে দেওয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২১ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনের ফেডারেল আদালতে মামলাটি দায়ের করেন হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার।
তিনি বলেন, ‘সরকারের বেআইনি দাবি মানতে চায়নি হার্ভার্ড। তাই সরকার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে গত সপ্তাহে। সেই কারণেই মামলা দায়ের করা হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। কারণ এভাবে অনুদান বন্ধ করা বেআইনি। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ারও নেই।’
জানা গেছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার, শক্তির মতো একাধিক দপ্তরের নাম রয়েছে হার্ভার্ডের আবেদনে। গারবার স্পষ্ট বলেন, সরকারের চাপের মুখে কোনোমতেই নতিস্বীকার করবে না হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যা সহ্য হয়নি নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ মিত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে ট্রাম্প প্রশাসন বেশ কিছু কঠোর নির্দেশ জারি করে।
একই সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ দফা নির্দেশনামা পাঠানো হয়। যা খারিজ করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ ধরনের সরকারি হস্তক্ষেপ তারা মানতে নারাজ। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ কোটি ডলারের অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষা দপ্তরের তরফে নোটিশ দিয়ে বহু বিজ্ঞানী ও গবেষককে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
মার্কিন নিয়মে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ‘কর ছাড়’ দেওয়া হয়। মূলত জনস্বার্থে কাজ করা প্রতিষ্ঠানই এই বিশেষ সুবিধা পায়। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আয়কর দিতে হয় না। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও সেই তালিকায়।
তবে এবার হার্ভার্ডের ক্ষেত্রে তা বন্ধও হতে পারে। সেই সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে স্রেফ রাজনৈতিক সংগঠন বলে বিবেচনা করে হার্ভার্ডের ওপর নতুন করে কর বসানো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতিও হারাতে পারে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীকে এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে নিজ দেশে। কিন্তু তবু দমতে নারাজ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।