জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের গুলিতে ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই, কেবল পায়ে হেঁটে বা ঘোড়ায় চড়েই যাওয়া যায়। এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির নিরাপত্তা বিভাগের একাধিক সূত্র।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে পেহেলগামের বৈসরান উপত্যকায় কয়েকজন বন্দুকধারী হামলা করে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত বৈসরান ভ্যালির ওপরের তৃণভূমিতে গুলির শব্দ শোনা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বন্দুকধারীরা আচমকা বন থেকে বেরিয়ে এসে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে।
পাহাড়, বন, স্বচ্ছ হ্রদ ও বিস্তৃত তৃণভূমির জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত পেহেলগাম। প্রতিবছর গ্রীষ্মকালে হাজার হাজার পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন। ঘটনার দিন সকালে একদল পর্যটক বেড়াতে যান সেখানে।
তবে বন্দুকধারীদের আচমকা গুলিবর্ষণে দিকভ্রান্ত হয়ে পড়েন তারা। গুলিতে ঘটনাস্থলেই কয়েকজনের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা ঘোড়ায় করে আহতদের উদ্ধার করেন। বাকিদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
একজন প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা খুব কাছ থেকে পর্যটকদের ওপর গুলি চালিয়েছে, ফলে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহত এক নারী পর্যটক পিটিআইকে বলেন, ‘আমার স্বামীর মাথায় গুলি লেগেছে। আরও সাতজন আহত হয়েছেন।’
নিহতদের মধ্যে কর্ণাটকের শিবমোগা জেলার একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী রয়েছেন। স্ত্রী-ছেলের সামনে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। ওই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছেন।
এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে মোবাইল ফোনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দু’দিনের সফরে মঙ্গলবার সৌদি আরব গেছেন তিনি। এরই মধ্যে অমিত শাহ দিল্লিতে তার বাড়িতে গোয়েন্দা ব্যুরো প্রধান তপন ডেকা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহনের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন। তিনি শ্রীনগরের উদ্দেশে রওনা হবেন।
জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি শোকাহত। পর্যটকদের ওপর এ আক্রমণ জঘন্য কাজ। এ হামলার অপরাধীরা পশু, অমানবিক ও অবমাননার যোগ্য। নিন্দার কোনো শব্দই যথেষ্ট নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাই। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা তদারকি করতে হাসপাতালে গিয়েছেন আধিকারিকরা। আমিও অবিলম্বে শ্রীনগরে ফিরে যাচ্ছি।’