বিশ্ব অর্থনীতির ভঙ্গুর পরিস্থিতি, বাণিজ্যিক সংঘাত ও আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে স্বর্ণের গুরুত্ব। বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিচ্ছেন এই মূল্যবান ধাতুকে।
সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষণে প্রকাশ পেয়েছে চমকপ্রদ পূর্বাভাস। তাদের মতে, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই প্রতি ভরির দাম পৌঁছাতে পারে অভাবনীয় উচ্চতায়। হিসাব অনুযায়ী, একক আউন্সের মূল্য ছাড়িয়ে যেতে পারে প্রায় ৪ হাজার বৈদেশিক মুদ্রা।
এর পেছনে রয়েছে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ:
বর্ধিত আর্থিক অনিশ্চয়তা: বিশ্বের বড় অর্থনীতিগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন, বিশেষ করে দুই পরাশক্তির মধ্যে চলমান সংঘর্ষ বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে।
ব্যাংকসমূহের ক্রয়চাপ: বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বর্তমানে ব্যাপক হারে স্বর্ণ মজুত করছে, যা চাহিদা বৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি।
মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রার অবমূল্যায়ন: বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির কারণে লোকজন প্রচলিত মুদ্রার স্থায়িত্বে আস্থা হারাচ্ছে এবং স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছে।
বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ সংগ্রহ হঠাৎ কমে যায় কিংবা বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তিগুলো সুদের হার বাড়িয়ে দেয়, তবে এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা ক্ষণস্থায়ী হতে পারে। তবে বর্তমান গতিপ্রবাহ অনুযায়ী, এই মূল্যবৃদ্ধি স্থায়ী হতে পারে আগামী দুই থেকে তিন বছর।
এদিকে সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান বছরেই স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। ইতোমধ্যে ২৮ বার ইতিহাসে সর্বোচ্চ মূল্যে পৌঁছেছে, যার সর্বশেষ রেকর্ড হয়েছে এই সপ্তাহের শুরুতে- প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৫০০ বৈদেশিক মুদ্রা স্পর্শ করে।
অন্যদিকে, আরেক নামী আর্থিক সংস্থার পূর্বাভাস বলছে, আগামী বছরের শেষে মূল্য পৌঁছাতে পারে ৩ হাজার ৭০০-এ, আর যদি অপ্রত্যাশিত বৈশ্বিক সংকট দেখা দেয়, তবে তা গিয়ে দাঁড়াতে পারে ৪ হাজার ৫০০-এও।