ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় একাধিক এলাকায় ট্যাংক, বিমান ও নৌকা থেকে ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালিয়েছে, যা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর মধ্যে অন্যতম বড় হামলা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে, ইসরায়েলের পূর্ণ অবরোধের ফলে স্বাস্থ্য খাত সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ার মুখে।
এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি পোলিও টিকাদান কর্মসূচি, যার লক্ষ্য ছিল ৬ লক্ষাধিক শিশুকে টিকা প্রদান, তা স্থগিত করা হয়েছে। এতে গাজা অঞ্চলে এক সময় প্রায় নির্মূল হওয়া এই পঙ্গু-সৃষ্টিকারী রোগটি ফিরে আসার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
অবরোধ ও হামলা
স্থানীয় সূত্র ও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত বুলডোজার ও যানবাহন- যেগুলোর মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উত্তোলন করা হচ্ছিল। হামাস জানায়, ধ্বংস হওয়া ৯টি উদ্ধারযান মিশর থেকে গাজায় পাঠানো হয়েছিল। তারা এই হামলাকে- গাজার জনগণের দুর্ভোগ আরও বাড়ানোর উদ্দেশ্যমূলক পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ৪০টি ইঞ্জিনিয়ারিং যান ধ্বংস করেছে যেগুলো তাদের মতে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এই যানগুলো ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে পরিচালিত হামলার সময়ও ব্যবহৃত হয়েছিল বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী।
কূটনৈতিক উদ্যোগ
এই অবস্থার মধ্যেই, সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যে একটি নতুন প্রস্তাব নিয়ে কায়রোয় আলোচনায় অংশ নিতে হামাসের একটি প্রতিনিধি দল আসছে বলে জানিয়েছেন মধ্যস্থতাকারী সূত্র। প্রস্তাব অনুযায়ী, সব জিম্মি মুক্তির পর ৫ থেকে ৭ বছরের জন্য যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে হামাসের এক সূত্র পরে জানায়, প্রতিনিধিদলের আসন্ন সফরের বিষয়ে তাদের জানা নেই। তারা তাদের আগের অবস্থানে অটল। যেকোনো চুক্তিতে যুদ্ধ অবশ্যই শেষ হতে হবে। অন্যদিকে, ইসরায়েল এখনো এই নতুন প্রস্তাবে আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দেয়নি। তাদের শর্ত হলো- হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্র করতে হবে, যা হামাস প্রত্যাখ্যান করেছে।
এই পরিস্থিতিতে গাজার সাধারণ মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। খাদ্য, চিকিৎসা, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির সংকট আরও গভীর হচ্ছে, এবং শিশুরা পোলিওর মতো প্রতিরোধযোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ছে।
আপনার মতামত লিখুন :