মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, চীনের পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ হারে শুল্ক শিগগিরই ‘বড় আকারে কমে আসবে’, যদিও তা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে না।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘১৪৫ শতাংশ অনেক বেশি, এটা এতটা থাকবে না। অনেকটাই কমে আসবে, তবে একেবারে শূন্য হবে না।’
এই মন্তব্যগুলো এমন এক সময়ে এলো, যখন দীর্ঘদিন ধরে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পারস্পরিকভাবে বাণিজ্যপ্রবাহ কার্যত থমকে দিয়েছে।
বাণিজ্য সম্পর্কের পুনর্গঠন চায় যুক্তরাষ্ট্র
ট্রাম্পের মন্তব্য আসে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের এক বক্তব্যের পর, যেখানে তিনি জানান যে, চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ ‘অস্থির এবং অস্থায়ী’ এবং খুব শিগগিরই এর উত্তেজনা কমবে বলে আশা করছেন তিনি।
বেসেন্ট এক বেসরকারি বিনিয়োগ সম্মেলনে জানান, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ চায় না বরং একটি ‘বাণিজ্য পুনঃসাম্য’ চায়, যেখানে দু’দেশের সম্পর্ক আরও ভারসাম্যপূর্ণ হবে।
এই বক্তব্যের পর ওয়াল স্ট্রিটে বড় ধরনের ঊর্ধ্বগতি দেখা যায় এবং তিনটি প্রধান মার্কিন সূচকই দিনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। একইসঙ্গে বুধবার (২৩ এপ্রিল) এশীয় শেয়ারবাজারেও ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়, যেখানে হংকংয়ের হ্যাংসেং সূচক ২.৫ শতাংশ, জাপানের নিক্কেই ২ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি ১.৫ শতাংশ বেড়ে যায়।
চীন এখনো আপসহীন, পাল্টা পদক্ষেপে অনড়
চীন তার অবস্থানে অনড় থেকেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বজায় রাখতে পাল্টা শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানিকে ‘অবিশ্বস্ত তালিকায়’ যুক্ত করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
কূটনৈতিক দিক ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক
ট্রাম্প দাবি করেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে তার ‘খুবই ভালো সম্পর্ক’ রয়েছে এবং তিনি আশা করছেন শি নিজেই আলোচনায় বসবেন। তবে তিনি আবারও স্পষ্ট করেন, ‘আমরাই প্রথম পদক্ষেপ নেব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘না, না, আমরা খুব ভালো আচরণ করব। ওরাও করবে। তারপর দেখা যাক কী হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ওদের একটা চুক্তি করতেই হবে, নইলে যুক্তরাষ্ট্রে তারা বাণিজ্য করতে পারবে না।’
চীনের প্রতিক্রিয়া ও অসন্তোষ
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত, তবে তা হতে হবে সম্মানের ভিত্তিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও স্থায়িত্ব ও পারস্পরিকতা থাকতে হবে।
চীন আরও ক্ষুব্ধ হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের সদস্যদের কিছু বিতর্কিত মন্তব্যে। সম্প্রতি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এক সাক্ষাৎকারে চীনা কৃষকদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করলে তা চীনা ইন্টারনেটে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
আপনার মতামত লিখুন :