সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেগুলোকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার কথিত প্রেমিকা সাবেক জিমন্যাস্ট আলিনা কাবায়েভার বহুদিনের ‘গোপন’ সন্তানের ছবি বলে দাবি করা হচ্ছে।
নিউইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, ভিসিএইচকে-ওজিপিইউ নামের একটি রুশ টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে ১০ বছর বয়সী ইভান ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন নামের ওই শিশুর ছবি ফাঁস হয়েছে।
ছবিগুলোর একটিতে দেখা যাচ্ছে, শিশুটি ক্যামেরার দিকে গম্ভীরভাবে তাকিয়ে আছে। তার পরনে ঐতিহ্যবাহী রুশ কসাক পোশাক। এর কলার ও সামনের অংশে সূক্ষ্ম কারুকাজ করা।
টেলিগ্রাম চ্যানেলটি ইভানকে ‘রাশিয়ার সবচেয়ে একাকী শিশু’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্যান্য শিশুর সঙ্গে তার খুব একটা যোগাযোগ নেই। মূলত নিরাপত্তারক্ষী, গৃহশিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তারা তার সারা দিনের সঙ্গী।
অন্য একটি ছবিতে ইভানকে তার কথিত মা আলিনা কাবায়েভার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। সাবেক জিমন্যাস্ট কাবায়েভা একসময় অলিম্পিক আসরে রাশিয়ার হয়ে সোনা জিতেছিলেন। তার ও পুতিনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক আছে বলে দীর্ঘদিন ধরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
ধারণা করা হয়, ৭২ বছর বয়সী ভ্লাদিমির পুতিন এবং ৪১ বছর বয়সী আলিনা কাবায়েভা জুটির চারটি সন্তান আছে। এর মধ্যে দুই ছেলের নাম ইভান পুতিন ও ভ্লাদিমির পুতিন জুনিয়র। ডসিয়ার সেন্টার নামের একটি অনুসন্ধানী সংস্থার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে দ্য মস্কো টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।
ওই সব প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সুইজারল্যান্ডের লুগানো শহরের একটি মাতৃসদন ক্লিনিকে ইভান পুতিনের জন্ম হয়।
ডসিয়ার সেন্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইভান ডিজনির কার্টুন ও সিনেমার প্রতি এতটাই আকৃষ্ট যে, সে প্রিয় চরিত্রদের মতো করে পোশাক পর্যন্ত পরে। তার এ অভ্যাস রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের খুবই অপছন্দ।
সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, আলিনা কাবায়েভা শুরুতে দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এরপর যখন ইভান জন্ম নেয়, তখন পুতিন এতটাই আনন্দিত হন যে চিৎকার করে বলে ওঠেন—‘কী দারুণ! অবশেষে! একটা ছেলে হলো!’ ২০১৯ সালের বসন্তে মস্কো শহরে ভ্লাদিমির পুতিন জুনিয়রের জন্ম হয়।
দুই ছেলেই অত্যন্ত বিলাসবহুল পরিবেশে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটায়। তারা শুধু বেতনভুক্ত শিক্ষক, পরিচারিকা ও নিরাপত্তাকর্মীদের সান্নিধ্যে থাকে। সাঁজোয়া ট্রেন, ব্যক্তিগত বিমান ও বিলাসবহুল ইয়টে করে অত্যন্ত গোপনে ভ্রমণ করে তারা।
কাবায়েভা এক সময় ‘রাশিয়ার সবচেয়ে নমনীয় নারী’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিকে রিদমিক জিমন্যাস্টিকে ব্রোঞ্জপদক এবং ২০০৪ সালের এথেন্স অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয় করেন।
ডসিয়ার সেন্টারের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাবায়েভা ও পুতিনের মধ্যকার কথিত প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয় ২০০৮ সালে। যদিও তারা এ সম্পর্কের কথা কখনো প্রকাশ্যে স্বীকার করেননি।
প্রথম স্ত্রী ও সাবেক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট লুদমিলা ওচেরেতনায়ার সঙ্গে পুতিনের দুটি ‘স্বীকৃত’ কন্যাসন্তান রয়েছে। তাদের নাম মারিয়া (৩৭) ও কাতেরিনা (৩৫)। তবে তারাও খুব একটা প্রকাশ্যে আসেন না।
আপনার মতামত লিখুন :