ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল স্থানীয় সময়) রাতে চালানো বোমাবর্ষণে কমপক্ষে ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১০০ জনের বেশি। বৃহস্পতিবার আলজাজিরা ও আনাদোলু বার্তা সংস্থা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার রাতভর ধারাবাহিক বিমান হামলায় নিহতদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। একইসঙ্গে আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবারও শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এই সময়ে গাজার বিভিন্ন অংশে একের পর এক বিমান ও স্থল হামলা চালানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত গাজার মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৩০৫ জনে এবং আহত হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন। গাজার বিপর্যস্ত অবকাঠামো, বিধ্বস্ত হাসপাতাল, বিদ্যুৎ ও জলের সংকটে মানবিক বিপর্যয় চরমে উঠেছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের ফলে গাজার ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং পুরো উপত্যকার প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন; উদ্ধারকর্মীরা নিরাপত্তার অভাবে সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
যুদ্ধবিরতির পরও এই হামলা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এর আগে জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও মার্চ মাসে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে মতানৈক্যের কারণে আবারো আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত বছর নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এছাড়াও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) একটি গণহত্যার মামলাও চলমান, যেখানে গাজার বিরুদ্ধে এই আক্রমণকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :