একটি শোকবার্তা ঘিরে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অস্বস্তি। পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে এক শোকবার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু বার্তাটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুছে ফেলা হয়। এই ঘটনাটি কেবল একটি ‘ত্রুটি’ ছিল, নাকি এর পেছনে রয়েছে কূটনৈতিক টানাপোড়েন- সেটিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
ইসরায়েল সরকার পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু নিয়ে শোক প্রকাশ করে একটি অনলাইন বার্তা প্রকাশ করেছিল, যা পরে মুছে ফেলা হয়। এই পদক্ষেপটি ভ্যাটিকান ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বিশেষভাবে নজর কেড়েছে।
এক্স প্ল্যাটফর্মে ইসরায়েলের সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়েছিল: ‘বিশ্রাম নিন শান্তিতে, পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর স্মৃতি হোক আশীর্বাদস্বরূপ।’ ছবিতে ২০১৪ সালে পোপের পশ্চিম প্রাচীর পরিদর্শনের একটি দৃশ্য ছিল। বার্তাটি কিছুক্ষণের মধ্যেই মুছে ফেলা হয়।
জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, পোপ সম্প্রতি ইসরায়েলবিরোধী মন্তব্য করেছেন এবং পোস্টটি ‘ভুলবশত’ প্রকাশিত হয়েছিল।
৮৮ বছর বয়সে সোমবার (২১ এপ্রিল) মৃত্যুবরণকারী পোপ ফ্রান্সিস গত বছরের নভেম্বরে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে কি না, তা তদন্তের বিষয়। এটি ছিল হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলের প্রতি পোপের সবচেয়ে কঠোর সমালোচনামূলক মন্তব্য।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যায়িত করেন, যা রোমের প্রধান ইহুদি রাব্বির সমালোচনার জন্ম দেয়। তিনি পোপকে নির্বাচিত ক্ষোভ প্রকাশ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।
ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের গাজা অভিযান গণহত্যা নয়, বরং শুধু হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত একটি সামরিক অভিযান।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, যিনি একটি কট্টর ধর্মীয় ও জাতীয়তাবাদী জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, পোপের মৃত্যুর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে পোপ ফ্রান্সিস পশ্চিম প্রাচীরে প্রার্থনা করেছিলেন এবং পরে পশ্চিম তীরের বেথলেহেম ও জেরুজালেমকে বিভক্তকারী ইসরায়েলি নিরাপত্তা প্রাচীরের একটি অংশে গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি প্রার্থনা করেন।