ঢাকা শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

‘পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত’

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার সঙ্গে পাকিস্তান জড়িত বলে অভিযোগ করছে ভারত। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) এ হামলার সঙ্গে ইসলামাবাদকে জড়নোর বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাস করেছে পাকিস্তান।

উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার প্রস্তাবটি সিনেটে উত্থাপন করেন।

এ সময় তিনি বলেন, পানি–সন্ত্রাসবাদ বা সামরিক উসকানিসহ যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করতে পাকিস্তান পুরোপুরি প্রস্তুত।

প্রস্তাবে ‘ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল সংগঠিত পেহেলগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানকে জড়িত করার সব অসার ও ভিত্তিহীন প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়েছে, নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা পাকিস্তান–সমর্থিত মূল্যবোধের পরিপন্থি।

প্রস্তাবে নিন্দা জানিয়ে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের মর্যাদাহানি করতে ভারত সরকার পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অপপ্রচারের এ ধরন পরিচিত। সংকীর্ণ রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্যই সন্ত্রাসবাদের ঘটনাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে গত মঙ্গলবার বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হন। নিহত ব্যক্তিদের একজন নেপালের, বাকিরা ভারতের নাগরিক। নিহত ব্যক্তিদের সবাই পুরুষ। অধিকাংশই ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে আসা।

হামলার পরদিন গত বুধবার ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে দেশটি। এসব পদক্ষেপের মধ্যে সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা ও কূটনীতিক সম্পর্ক হ্রাস অন্যতম।

পরদিন বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তকে যুদ্ধের উসকানি (অ্যাক্ট অব ওয়ার) বলে উল্লেখ করেছে পাকিস্তান।

ইসলামাবাদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) ওই বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, ভারতের উড়োজাহাজের জন্য নিজেদের আকাশসীমা ও ওয়াগা সীমান্তচৌকি বন্ধ করা, ভারতীয় নাগরিকদের দেওয়া সব সার্ক ভিসা বাতিল অন্যতম।

শুক্রবার সিনেটে পাস হওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের জনগণ শান্তির বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু কাউকে দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও স্বার্থ লঙ্ঘন করতে দেবে না।’

প্রস্তাবে দাবি করা হয়েছে, ‘পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের মাটিতে সন্ত্রাসবাদ এবং নিশানা করে গুপ্তহত্যা চালানোর জন্য’ ভারতকে জবাবদিহি করতে হবে।

প্রস্তাবটি শেষ করা হয় এভাবে, ‘কাশ্মীরের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার আদায়ের জন্য তাদের ন্যায্য সংগ্রামের প্রতি পাকিস্তানের অটল নৈতিক, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সমর্থন ও প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে পাকিস্তান।’

প্রস্তাব উত্থাপনের সময় ইসহাক দার বলেন, ‘যদি কেউ পাকিস্তানে রাজনৈতিক হঠকারিতার কথা ভাবে, (তাদের মনে রাখা দরকার) আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত রয়েছে।’

সিনেটর শেরি রেহমান বলেন, ‘সিনেটে আমি আগেও বলেছি, মোদী প্রথম মেয়াদেই পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন এবং পানি–সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন।’

পাকিস্তানের সাবেক এ জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি যুদ্ধের সময় এ চুক্তি টিকে ছিল। কোনো যুদ্ধে এ চুক্তিকে স্পর্শ করা হয়নি। কিন্তু এখন তারা এ চুক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। আমরা এটি হতে দেব না।’