কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করে ভারত। এরই জেরে সিন্ধু জলচুক্তি সীমান্ত বন্ধসহ আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি। পাল্টা জবাব হিসেবে পাকিস্তানও একই সিদ্ধান্তে নিজেদের অবস্থান জানান।
এদিকে সীমান্ত বন্ধের ফলে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পণ্য আদান-প্রদানে দুই দেশের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করছে বিশ্লেষকরা।
আটারি-ওয়াঘা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে থাকা আন্তর্জাতিক সীমান্ত। ভারতের সীমান্তবর্তী গ্রামের নাম আটারি এবং পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী গ্রামের নাম ওয়াঘা। এই দুই গ্রাম দিয়েই স্থল পণ্য ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আদান-প্রদান চলে। আফগানিস্তান থেকে ভারতে যে পণ্য ঢোকে এই সীমান্ত দিয়েই।
অমৃতসর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আটারি ও ওয়াঘা সীমান্ত। ১২০ একর জমিজুড়ে বিস্তৃত এই এলাকা বাণিজ্য সীমান্ত হিসেবে উভেয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আটারির চেকপোস্ট দিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সয়াবিন, মুরগি, শাকসবজি, লাল মরিচ, প্লাস্টিকের দানা এবং প্লাস্টিকের সুতার মতো পণ্য রপ্তানি করা হয়। এ ছাড়াও, শুকনো খেজুর, জিপসাম, সিমেন্ট, কাচ, শিলা লবণ এবং বিভিন্ন ভেষজ উভয় দেশের মধ্যে আদান-প্রদান করে থাকে।
বিভিন্ন সময়ে দুই দেশ নানা বাগবিতণ্ডায় জড়ালেও এই অঞ্চল পণ্য এবং মানুষের যাতায়াতের জন্য অনেকটাই সহজতর করে রেখেছিল। তবে চলমান উত্তেজনায় বাণিজ্যের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে ।
২০২৩-২৪ সালে এই স্থল সীমান্ত দিয়ে ৩ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে। ৬ হাজার ৮৭১টি কার্গো চলাচল করেছে। এর পাশাপাশি ৭১ হাজার ৫৬৩ জন যাত্রী চলাচলও হয়েছে এই সীমান্ত দিয়ে।
পহেলগামে হামলার পর স্থল সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় এই ক্ষেত্র নিশ্চিতভাবে ধাক্কা খাবে। তবে ২০১৮-১৯ সালের পর থেকেই এই সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্যের পরিমাণ কমেছে। তবে গত কয়েক বছরে সেই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু তা ফের ধাক্কা খেল।
আটারি স্থলবন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের ওপর উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে। এই আন্তঃসীমান্ত বিনিময়ের ওপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং স্বল্পপুঁজির প্রস্তুতকারকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অন্যদিকে ভারতে আফগানিস্তান থেকে পণ্য আমদানি এবং রপ্তানির একটা অংশ এই আটারি-ওয়াঘা রুট দিয়ে পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে যায়। ফলে সেই পরিবহন ব্যবস্থাও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :