দুর্নীতির দায়ে আমেরিকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর কেনিয়ায় দুটি বড় চুক্তি বাতিল হয়েছে গৌতম আদানির। এবার নতুন করে আরেক সংকটে পড়ল বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এই ধনকুবেরের প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ। এবার এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ায় বর্ণবাদের অভিযোগ উঠেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের একটি কয়লা ইউনিটে বর্ণবাদী আচরণ করা হয়েছে বলে এক আদিবাসী গোষ্ঠী অভিযোগ করেছে। আর সেই অভিযোগ জমা পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার হিউম্যান রাইটস কমিশনে।
নাগানা ইয়ারবাইন ওয়াংগান ও জাগালিঙ্গো সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী এই অভিযোগ করেছে বলে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ওই কয়লা ইউনিটের নাম ব্র্যাভাস মাইনিং অ্যান্ড রিসোর্সেস। এ নিয়ে এক বিবৃতিও প্রকাশ করেছে আদিবাসী গোষ্ঠীটি।
আদিবাসী গোষ্ঠীর বিবৃতিতে দাবি করা হয়, বর্ণবাদী আচরণ করছেন ব্র্যাভাস মাইনিং অ্যান্ড রিসোর্সেসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা আদানির কারমাইকেল কয়লা খনির এলাকায় আদিবাসীদের উৎসব করতে বাধা দেন। এমনকি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও শারীরিকভাবে বাধা দেওয়া হয় এবং হেনস্তা করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘আমরা আদানির কাছ থেকে বছরের পর বছর ধরে বৈষম্য ও অপমান সহ্য করেছি। আমরা এটি আর সহ্য করতে চাই না। আমাদের আইনজীবীরা গত বছর উদ্বেগ জানিয়ে নোটিশ পাঠানোর পর থেকে আদানি তাদের আচরণ সম্পর্কে অবগত। কিন্তু তারা ব্যবস্থা নিতে অস্বীকার করেছে। এখন আইনি আশ্রয়ই একমাত্র উপায়।’
তবে ব্র্যাভাস মাইনিং অ্যান্ড রিসোর্সেসের এক মুখপাত্র এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এর আগে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আমেরিকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। একইসঙ্গে তাঁর ভাইয়ের ছেলে সাগর আদানির বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করা হয়। কৌঁসুলিরা এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
আদানিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আদানি গ্রিন এনার্জির জন্য সৌরশক্তি প্রকল্পের কাজ পেতে তাঁরা ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সাড়ে ২৬ কোটি ডলারের বেশি ঘুষ দিয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলার মুনাফা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
এরপর কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো ভারতের ‘বিতর্কিত’ ধনকুবের গৌতম আদানির সঙ্গে হওয়া দুটি বড় চুক্তি বাতিল করেছেন। মার্কিন প্রসিকিউটররা আদানির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ আনার পর এই সিদ্ধান্ত আনে কেনিয়া। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট সংসদে বলেন, ‘যদি দুর্নীতির বিষয়ে নিশ্চিত প্রমাণ বা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য আসে, আমি কঠোর পদক্ষেপ নিতে পিছপা হব না।’ তাঁর এই বক্তব্যের পর সংসদে উপস্থিত লোকজন উচ্চস্বরে সমর্থন জানান।
আপনার মতামত লিখুন :