মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ফরাসি বার্তা সংস্থাকে স্থানীয় এক উদ্ধারকর্মী ও একটি জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
এ ঘটনার আগে, রাখাইনে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। রাজ্যটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) রাজ্যটির একাধিক এলাকা দখল করে নিয়েছিল এবং ওই অঞ্চলটিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। গত বছর, এই গোষ্ঠী রাজ্যটির বেশিরভাগ অংশের দখল নেয় এবং ইতোমধ্যে রাখাইনের রাজধানী সিত্তের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
২০২১ সালে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের পতন হয়। এরপর থেকেই দেশজুড়ে জান্তা-বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়, এবং রাখাইনে সংঘাত তীব্রতর হয়।
রাখাইন রাজ্যের উত্তেজনা নিয়ে আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থু খা জানান, "বুধবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে সেনাবাহিনীর বিমান থেকে রাখাইনের রামরি দ্বীপের কিয়াউক নি মাউ শহরে বোমা হামলা চালানো হয়। এতে ওই এলাকায় আগুন ধরে যায় এবং পাঁচশ`রও বেশি বাড়ি পুড়ে যায়। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর হামলায় ৪০ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন।"
স্থানীয় উদ্ধারকর্মী এএফপিকে জানান, জান্তা বাহিনীর হামলায় ৪১ জন নিহত এবং ৫২ জন আহত হয়েছেন।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই উদ্ধারকর্মী বলেন, "পরিবহন ব্যবস্থা খুবই কঠিন হওয়ায় আমরা আহতদের চিকিৎসা সেবা দিতে পারছি না। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিটাডাইন বা মিথাইলেড স্পিরিটও নেই।"
বোমা হামলার পর সেখানকার দৃশ্যে দেখা যায়, বিস্মিত বাসিন্দারা ধ্বংসাবশেষের মাঝে হাঁটছেন। হামলায় মাটিতে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এবং গাছপালারও ক্ষতি হয়েছে। অনেক ভবনের দেয়াল ধ্বংস হয়ে গেছে।
রাখাইনে বিমান হামলার বিষয়ে মন্তব্য জানাতে জান্তা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এতে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :