ঢাকা রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন

যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে মুক্তি পাচ্ছে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৪, ০৭:১৭ পিএম

যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে মুক্তি পাচ্ছে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ

ছবি: সংগৃহীত

দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপসহ চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব একটি চুক্তির অধীনে মরিশাসের কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের নতুন সিদ্ধান্তকে ভারত মহাসাগরের ভূ-রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৬৮ সালে মরিশাস স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ছিল চাগোস দ্বীপপুঞ্জ। ওই দ্বীপগুলো নিয়ে চলমান বিরোধ এবং আন্তর্জাতিক চাপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দীর্ঘ আলোচনার পর একটি চুক্তির অধীনে নতুন সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য।

চাগোস দ্বীপপুঞ্জের দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপটি কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই দ্বীপে একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। নতুন চুক্তি অনুযায়ী—৯৯ বছরের জন্য এখানে মার্কিন সামরিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে। এই চুক্তিটি মরিশাসের জন্য আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দেয়। শুধু তাই নয়, এই চুক্তিতে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনেরও প্রতিশ্রুতি রয়েছে। যুক্তরাজ্য এবং মরিশাসের নেতারা ঐতিহাসিক ভুলের সমাধান এবং দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি হিসাবে এই চুক্তিটি তৈরি করেছেন।

এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, উভয় সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসলেও চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের মধ্যে এখনো উল্লেখযোগ্য মাত্রায় উদ্বেগ রয়ে গেছে। এই দ্বীপপুঞ্জের দ্বিতীয় প্রজন্মের বাসিন্দা ফ্র্যাঙ্কি বনটেম্পস মনে করেন, তাঁদের সঙ্গে এখনো বিশ্বাসঘাতকতা হয়েছে। কারণ চুক্তি সম্পর্কিত আলোচনায় ওই দ্বীপপুঞ্জের কোনো অধিবাসীকে প্রতিনিধি হিসেবে রাখা হয়নি।

চাগোস দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে অতীতে অনেকবারই কূটনৈতিক প্রশ্নের মুখে পড়েছিল যুক্তরাজ্য। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এই দ্বীপপুঞ্জ শাসনের জন্য মরিশাসের অবস্থানকেই সমর্থন করে এসেছে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে জানা যায়—স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য শর্ত হিসেবে চাগোস দ্বীপগুলোকে ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হয়েছিল মরিশাসকে। পরবর্তীতে এই দ্বীপগুলোর মধ্যে দিয়েগো গার্সিয়াকে গোপনে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইজারা দিতে সম্মত হয় যুক্তরাজ্য। তবে আফ্রিকান দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থান এবং ব্রেক্সিট-পরবর্তী পরিস্থিতির পরিবর্তনের ফলে দ্বীপগুলো নিয়ে বিগত বছরগুলোতে যুক্তরাজ্যের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছিল।

আরবি/ এইচএম

Link copied!