ভারতের সাবেক মন্ত্রী ও এনসিপির নেতা বাবা সিদ্দিকিকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শিবকুমার গৌতমকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। ভারতীয় পুলিশের দাবি, আসামি শিবকুমার জানিয়েছে– বাবা সিদ্দিকিকে শুধু গুলি করেই ক্ষান্ত হননি তিনি, এনসিপি নেতার মৃত্যু নিশ্চিত করতে পৌঁছে গিয়েছিলেন লীলাবতী হাসপাতালেও।
জেরায় অভিযুক্ত শিবকুমার পুলিশকে জানিয়েছে, গুলি চালানোর পর দ্রুত গায়ের জামা পরিবর্তন করেন শিবকুমার। বান্দ্রা পূর্বে যেখানে বাবা সিদ্দিকিকে গুলি চালানো হয়েছিল, পরে সেখানে আসেন তিনি। এরপর সিদ্দিকের মৃত্যু নিশ্চিত করতে বান্দ্রা পশ্চিমের লীলাবতী হাসপাতালে যান।
হাসপাতালের বাইরে জনতার ভিড়ের মধ্যে এই খুনি ৩০ মিনিট অপেক্ষা করেছিলেন। ‘মৃত্যু হয়েছে’, এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরপরই স্থান ত্যাগ করেছিলেন তিনি। খুনীর এমন ‘নিষ্ঠুরতম নিষ্ঠা’ দেখে হতবাক পুলিশের কর্তারাও!
ঘটনার পর শিবকুমারকে খুঁজে পাচ্ছিল না মুম্বাই পুলিশ। রীতিমতো মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় তাদের। জানা গেছে, শিবকুমার নেপালে পালানোর পরিকল্পনা করছিল কিন্তু শেষমেশ তা আর হয়নি। অবশেষে ঘটনার ২৯ দিনের মাথায় গত রোববার (১০ নভেম্বর) মূল এই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে জেরা করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ।
গত ১২ অক্টোবর মুম্বাইয়ে ছেলে জিশানের অফিসের বাইরে গুলি করে খুন করা হয়েছিল বাবা সিদ্দিকিকে। তাকে গুলি করার জন্য শিবকুমার ছাড়া আরও দু’জন আততায়ী এসেছিল ঘটনাস্থলে। তাদের মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে মুম্বাই পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও চম্পট দিয়েছিল মূল অভিযুক্ত শিবকুমার। পুলিশ সূত্রে খবর, হরিয়ানার বাসিন্দা গুরনেল সিং ও উত্তর প্রদেশের ধরমরাজ কাশ্যপকে সঙ্গে নিয়েই ‘অপারেশন’ করতে এসেছিল শিবকুমার।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, শিবকুমারের সঙ্গে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই জেলবন্দী আনমোল বিষ্ণোইয়ের নির্দেশেই বাবা সিদ্দিকিকে খুন করা হয় বলে খবর।
কিন্তু কেন ১২ অক্টোবর রাতকে বেছে নেয়া হয়েছিল? পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তরা ভেবেছিল উৎসবের রাতে খুন করে পালানো সহজ হবে। সবকিছু প্ল্যানমাফিক চললেও দুর্ঘটনার দিন ঘটনাস্থল থেকেই দুই আততায়ীকে গ্রেপ্তার করে ফেলে পুলিশ। তবে কোনোরকমে সেখান থেকে পালিয়ে যান শিবকুমার।
আপনার মতামত লিখুন :