ঢাকা শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশে জঙ্গিদের মুক্তিতে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যে সতর্কতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪, ০৭:২৩ পিএম

বাংলাদেশে জঙ্গিদের মুক্তিতে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যে সতর্কতা

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলেও নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়ছে দিল্লি। নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা এবিটি-র প্রধান জসিমউদ্দিন রহমানিকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া নিয়ে। যার জন্য ইতোমধ্যেই ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

আনন্দবাজার বলছে, বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন অনেকেই, যার মধ্যে আছেন জঙ্গি সংগঠনের অনেক সদস্যও। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- এর ফলে আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ-সহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এবিটি গত কয়েক বছর ধরেই তাদের সন্ত্রাসের জাল বিস্তার করছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।

ভারতীয় গোয়েন্দাদের বিশ্বাস, আল-কায়দা ও পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে এবিটি-র। আসামে সম্প্রতি এবিটি সদস্য গ্রেফতার হয় বলেও দাবি করেছে প্রতিবেদনটি। এছাড়া ত্রিপুরা পুলিশের হাতেও ধরা পড়েছে সংগঠনটির স্লিপার সেলের সদস্যরা। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশও বিশেষ অভিযান চালিয়ে গত বছর নব্য জেএমবির সঙ্গে এবিটি জঙ্গিদের গ্রেফতার করেছে। আটককৃতদের জেরা করে ভারতীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে এবিটি ভারতেও নাশকতা চালানোর ছক কষছে বহু দিন ধরে। তাই এবিটি প্রধান রহমানির মুক্তির পর জারি হয়েছে বাড়তি সতর্কতা।

২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্লগার রাজীব হায়দারকে খুনের অভিযোগে রহমানিকে গ্রেফতার করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। কিন্তু গত ২৫ অগস্ট এই এবিটি নেতাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকার মাদ্রাসাগুলিতে জঙ্গি কার্যকলাপে মদত জোগানোর অভিযোগ রয়েছে এবিটি-র বিরুদ্ধে।

গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী হাসিনা সরকারের আগে আসামের আলফা, ত্রিপুরার এটিটিটিএফ ও এনএলএফটি-সহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন রীতিমতো প্রশিক্ষণ শিবির খুলে বসেছিল বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায়। আইএসআইয়ের মদতে প্রশিক্ষণ চলত ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের। কিন্তু ২০০৯-এর পর বাংলাদেশের মাটিতে জায়গা না পেয়ে ভারতীয় জঙ্গিরা অনেকেই আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর পূর্বাঞ্চলে।

বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় জঙ্গি তৎপরতার বড় প্রমাণ ২০০৪ সালে ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে আলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়াও স্বীকার করেন এই বিপুল অস্ত্র তাদের জন্যই বাংলাদেশে এসেছিল। তিনি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে স্বীকার করেছিলেন, বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিল এবং তাদের সহায়তাতেই বাংলাদেশে অস্ত্র খালাসের ব্যবস্থা হয়।

বর্তমানে যে ভাবে জঙ্গিরা মুক্তি পাচ্ছে, তাতে চিন্তা বাড়ছে দিল্লির। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের আশঙ্কা নতুন করে বাংলাদেশ জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথম থেকেই কড়া হাতে জঙ্গিবাদ দমন করা না হলে ফের অশান্ত হয়ে উঠতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। সূত্র: আনন্দবাজার

আরবি/এফআই

Link copied!