আমেরিকায় মামলা হওয়ার পর একের পর এক সংকটে পড়ছেন ভারতের ধনকুবের গৌতম আদানি। ঘুষকাণ্ডের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছে। এরপর বিভিন্ন দেশে তাঁর আদানি গ্রুপের প্রকল্প সংকটে পড়ছে। প্রথমে কেনিয়া, এরপর অস্ট্রেলিয়া। সম্প্রতি বাংলাদেশেও পর্যালোচনা শুরু হবে বলে জানা যায়। এবার শ্রীলঙ্কাও একই পথে হাঁটছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া বিদ্যুৎ-চুক্তি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত বাম সরকার। আজ সোমবার জানানো হয়, শ্রীলঙ্কার আগের সরকারের সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর জ্বালানি সংক্রান্ত যে চুক্তি হয়েছিল, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে শ্রীলঙ্কার নবগঠিত মন্ত্রিসভা। এমনটাই জানিয়েছেন সে দেশের সিলোন ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের মুখপাত্র ধানুশকা পরাক্রমসিংহে।
ধানুশকা পরাক্রমসিংহে বলেন, আদানি গোষ্ঠীর ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পে খরচ কতটা হবে, সেটি পরিবেশের উপর কতটা প্রভাব ফেলবে, এই সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইন বলছে, প্রাথমিকভাবে শ্রীলঙ্কার মান্নার ও পুনেরিনে জ্বালানি কেন্দ্রগুলো তৈরি করা হচ্ছিল। চুক্তি বাতিল না হলেও আপাতত এটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরাকুমার দিশানায়েকে।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার আমলে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া একটি বাণিজ্যচুক্তি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও। গতকাল রোববার বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, শক্তি ও খনিজ সম্পদ দপ্তর বিষয়ক মূল্যায়ন কমিটি একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন সংক্রান্ত চুক্তি খতিয়ে দেখার জন্য আইনি ও তদন্তকারী সংস্থার সাহায্য প্রয়োজন।
অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় আদানি গোষ্ঠীর মালিকানাধীন একটি বন্দরকে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারে আমেরিকার সরকারি সংস্থা ‘ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স করপোরেশন’ (ডিএফসি)। রোববার সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করছে।
ঘুষের অভিযোগ এনে গত বুধবার গৌতম আদানি ও তাঁর ভাতিজা সাগর আদানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে আমেরিকার সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। মামলায় বলা হয়েছে, আদানি গ্রুপকে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দেওয়ার সঙ্গে তাঁরা জড়িত ছিলেন। এটি কোম্পানির ঘুষবিরোধী নীতি ও আইনের পরিপন্থী।
এ অভিযোগের ব্যাপারে গৌতম আদানিকে ২১ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন নিউইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ফেডারেল কোর্ট। এ ছাড়া মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানিদের ওপর অনির্দিষ্ট আর্থিক জরিমানা ও বিধিনিষেধ চেয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :