গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর সেইদিনই ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। দেশের এই রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার ব্যাপারে ব্যাপক আলোচনা শুরু করেন। তারা মনে করেন, হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল।
তবে এবার এ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা ছিল না এবং এই বিষয়টি ভারতও বিশ্বাস করে।
হোয়াইট হাউসের রুজভেল্ট রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারও ঘোষণা করেছিল যে হাসিনাকে উৎখাতের ঘটনায় তাদের কোনো ভূমিকা নেই। সেসময় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে হস্তক্ষেপের অভিযোগকে মিথ্যা বলে অভিহিত করেছিল এবং এই ঘটনাটি নিয়ে গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদ জানায়।
আর সম্প্রতি দিল্লি সফর করে আসা সুলিভান এই ঘটনার বিষয়ে আরো একবার স্পষ্ট করেন যে, ঢাকায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর পেছনে ওয়াশিংটনের কোনো ভূমিকা ছিল না। তিনি আরও বলেন, ভারতের শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও বিশ্বাস নেই যে, বাংলাদেশের এই ঘটনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পর্ক রয়েছে।
এছাড়াও, গত বছরের আগস্টে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়ের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল এমন কোনো তথ্য যদি প্রকাশ পায় তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।
প্রসঙ্গত, গণআন্দোলনের পর ক্ষমতা ছাড়ার পর ভারতীয় ইকোনমিক টাইমস পত্রিকা এক প্রতিবেদনে দাবি করেছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ভূমিকা রেখেছিল, কারণ তারা বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ চায়। পত্রিকাটি সেসময় আরও বলেছিল, শেখ হাসিনা তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মাধ্যমে পত্রিকাটির কাছে এই তথ্য পৌঁছে দিয়েছেন। তবে হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ পরে সোশ্যাল মিডিয়াতে জানান যে, তার মা কখনও এমন কোনো মন্তব্য করেননি।
আপনার মতামত লিখুন :