ঢাকা: জার্মান সরকার দুঃস্বপ্নের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। দেশটির আশা ছিল, কমালা হ্যারিস জিতবেন এবং জো বাইডেনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ট্রান্সআটলান্টিক এবং বহুপাক্ষিক সহায়তার ঐতিহ্যকে ধরে রাখবেন। ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর সেই আশা দ্রুতই উবে গেছে।
জার্মান সরকার এখন অপ্রস্তুত। জার্মান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস এর হেনিং হফ মনে করেন, “ডেমোক্র্যাটদের ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করা একটি ভুল ছিল। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে চ্যান্সেলর যে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন তা সম্ভবত একটু বেশিই একমুখী ছিল। ট্রাম্প শিবিরের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি, এই সত্যটি এখন তাকে পীড়িত করবে।”
২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্মৃতি এখনও বার্লিনের কাছে খুব স্পষ্ট। এ সময় ট্রাম্প ন্যাটোর ওপর আস্থাহীনতা প্রকাশ করেন এবং জার্মানি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের হুমকি দেন। জার্মানি এবং ন্যাটোভুক্ত অন্য দেশগুলোকে নিজস্ব প্রতিরক্ষায় যথেষ্ট অবদান না রেখে মার্কিন সামরিক সুরক্ষা থেকে উপকৃত হওয়ার সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প।
হেনিং হফ মনে করেন, জার্মান সরকারের জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ ‘ব্যর্থতাগুলো কাটিয়ে ওঠা’৷ তিনি বলেন, “ইউরোপীয়রা, বিশেষ করে জার্মানরা যে তাদের প্রতিরক্ষার বৃহত্তর ভার বহন করার জন্য সত্যিই প্রস্তুত তা দেখানোর জন্য একটি আরও শক্তিশালী সংকেত প্রয়োজন। যদি আমরা নিজেরা ঝগড়া করতে থাকি এবং তর্ক করতে থাকি তাহলে আমরা ওয়াশিংটনে কাউকে প্রভাবিত করতে পারব না, ট্রাম্পের অধীনে তো অবশ্যই নয়।”
জার্মানির জন্য ট্রাম্পের আগের আমল একটি খারাপ উদাহরণ। জার্মান সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হলো জলবায়ু অ্যাকশন। জার্মানি কার্বন নিরপেক্ষ হতে চায় এবং তার জ্বালানির উৎসের পুনর্গঠন করে সমগ্র অর্থনীতিকে কার্বন নিরপেক্ষ করতে চায়। বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসন এই ইস্যুতে জার্মানির শক্তিশালী মিত্র ছিল।
নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের ফলে যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে কার্বন নির্গমন সীমিত করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে বাধ্যতামূলক নিয়মগুলো ব্যবহার করে চাপ প্রয়োগ করা জার্মান সরকারের জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
আপনার মতামত লিখুন :