ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

পদত্যাগ করেও অস্বস্তিতে টিউলিপ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৯:৪৮ এএম

পদত্যাগ করেও অস্বস্তিতে টিউলিপ

টিউলিপ সিদ্দিক

ব্রিটেনের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি) পদ থেকে পদত্যাগ করলেও টিউলিপ সিদ্দিক এখনো স্বস্তিতে নেই। দুর্নীতির একাধিক অভিযোগের কারণে প্রবল সমালোচনার মুখে গত মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মা শেখ রেহানা গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, রাজনীতির মাঠে দুই দেশেই কলঙ্কিত টিউলিপ এখন শান্তি খুঁজে পাচ্ছেন না।

নিবন্ধে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস সদ্য পদত্যাগ করা ব্রিটিশ ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। তিনি এই অভিযোগকে ‘সরাসরি ডাকাতি’ আখ্যা দিয়ে টিউলিপকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।

অর্থপাচারের সঙ্গে টিউলিপের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যায়। টিউলিপ ব্রিটেনের সরকারি প্রতিনিধিদলের চীন সফর থেকে বিরত থাকেন এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাসের কাছে অভিযোগের তদন্তের দাবি জানিয়ে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন। তবে টিউলিপ তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগগুলোকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন।

চলতি মাসে ফিন্যানশিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপ তার খালা এবং বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ একজনের থেকে লন্ডনে একটি দুই-বেডরুমের ফ্ল্যাট উপহার পেয়েছেন। তবে টিউলিপ দাবি করেন, এই ফ্ল্যাটটি তিনি তার মা-বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন এবং তিনি সম্প্রতি জানতে পেরেছেন যে, এটি একটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী উপহার দিয়েছেন।

২০১৮ সালের পর টিউলিপ হ্যাম্পস্টেডে একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন, যা তার ছোট বোনের ছিল এবং সেটিও শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ আরেক ব্যবসায়ীর উপহার। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যবসায়ীর ভাড়া বাড়িতে থাকছেন।

২০১৫ সালে টিউলিপ সিদ্দিক প্রথমবার পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন এবং নির্বাচনে জয়লাভের পর তিনি ব্রিটিশ আওয়ামী লীগের বাংলাদেশি সদস্যদের সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।

গার্ডিয়ানের নিবন্ধে আরও বলা হয়, ২০১৩ সালে ১২ বিলিয়ন ডলারের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তির অনুষ্ঠানে টিউলিপ সিদ্দিকের উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ওই সময় তাকে শেখ হাসিনা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা যায়। যদিও টিউলিপ দাবি করেন, এটি ছিল একটি পারিবারিক সফর এবং তিনি সেখানে পর্যটক হিসেবে গিয়েছিলেন। লরি ম্যাগনাস তার এই ব্যাখ্যা মেনে নিয়েছেন। তবে এখন টিউলিপ বাংলাদেশের ওই চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির তদন্তের মুখোমুখি।

এদিকে লরি ম্যাগনাস টিউলিপের বাড়ি সংক্রান্ত কোনো নিয়ম ভঙ্গের প্রমাণ পাননি এবং লেনদেনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। তবে তিনি বলেন, টিউলিপের পারিবারিক সম্পর্কের কারণে সৃষ্ট ভাবমূর্তির ঝুঁকি সম্পর্কে আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল। তিনি এও উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার চাইলে টিউলিপের দায়িত্ব পুনর্বিবেচনা করতে পারেন। 

আরবি/এফআই

Link copied!