চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২ এপ্রিল, ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

আলমডাঙ্গায় জোড়া খুনের দায়ে তিনজনের ফাঁসি

ছবি সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বৃদ্ধ দম্পতিকে হত্যার দায়ে তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে আরও এক আসামীকে দুই বছরের কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের বিচারক মো. মাসুদ আলী।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, আলমডাঙ্গার আসাননগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক (২৪), একই গ্রামের শেষ পাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৫) ও মাঝের পাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুত আলী (২৩)। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী আসাননগর স্কুল পাড়ার তাহাজ উদ্দীনের ছেলে শাকিল হোসেন (২৩)।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন বাজার পাড়ার বাড়ি থেকে বৃদ্ধ দম্পতি নজির মিয়া (৭০) ও ফরিদা বেগমের (৬০) হাত পা মুখ বাঁধা রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর পরদিন ওই বৃদ্ধ দম্পতির মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন শিলা বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর চারদিন পর হত্যাকারী সন্দেহে ওই চার আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আসামীরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ওই চার আসামীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) শিহাব উদ্দীন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, বৃদ্ধ নজির আলী ছিলেন একজন বালু ব্যবসায়ী। আর আসামী সাহাবুল হক ছিলেন তার বালু ব্যবসায়ে চলিত যানের ড্রাইভার। ড্রাইভার হওয়ার সুবাদে ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে যাওয়া আসা ছিল ড্রাইভার সাহাবুলের। এ সুযোগে ওই বাড়িতে কোথায় টাকা পয়সা থাকে তাও জানতো আসামী। পরিকল্পনা মাফিকা আসামীরা ওই দম্পতির বাড়ি থেকে নগদ টাকা লুট করতে বালু কেনার নাম করে বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় বৃদ্ধা ফরিদা বেগম বাধা দিলে তাকে প্রথমে শ্বাসরোধ এবং কুপিয়ে হত্যা করে এবং বৃদ্ধ নজির মিয়াকেও হত্যা করে আসামীরা। লুট করে নিয়ে যায় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও একটি মোবাইলফোন।

মামলায় মোট ৩৭ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিচারক এ রায় ঘোষনা করেন।

মামলার রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় সরাসরি হত্যার সাথে জড়িত ৩ জনকেই মৃত্যদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে এবং লুট করে নেয়া মোবাইল ফোনের ক্রেতাকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। মামলার রায়ে বাদি পক্ষ সন্তুষ্ট।

মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান জানান, শুধুমাত্র জবানবন্দীর ওপর ভিত্তি করেই মামলার কার‌্যক্রম পরিচালিত হয় এবং রায় ঘোষনা করা হয়। এ রায়ে বিবাদীরা সন্তুষ্ট নন। তাই উচ্চ আদালতে আপীল করার প্রস্তুতি চলছে।

মন্তব্য করুন