ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ, ২০২৪, ০৫:৪১ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

উদ্বোধনী ম্যাচে মুস্তাফিজদের চেন্নাইয়ের জয়

ছবি সংগৃহীত

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টায় আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে মাঠে নামে চেন্নাই সুপার কিংস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ম্যাচটিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান করে বেঙ্গালুরু। জবাবে ১৮.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় চেন্নাই। 

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট চালান বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ডু প্লেসি। বিরাট কোহলিকে একপাশে রেখে একের পর এক বাউন্ডারিতে দীপক ও তুষারদের করা প্রথম তিন ওভারে তুলে নেন ৩৩ রান। যেখানে ১৭ বলে ডু প্লেসির রান ছিল ৩০ আর ১ বলে ১ রান কোহলির। চতুর্থ ওভারে এসে কিছুটা সামাল দেন লঙ্কান স্পিনার মহেশ থিকশানা। এ ওভারে আসে ৩ রান।

চেন্নাইয়ের নতুন অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড় পঞ্চম ওভারটি তুলে দেন মুস্তাফিজের হাতে। এ দিন যেন অন্য এক ফিজকে দেখা গিয়েছে চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তার পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। তার বোলিং ফিগার ছিল যথাক্রমে ৪২/০, ৪২/১ ও ৪৭/১। এমন বাজে পারফরম্যান্সে জায়গা হারান প্রথম দুই ওয়ানডেতে। এরপর তৃতীয় ওভানডে খেলে আইপিএলে পা রাখলেও একাদশে তার সুযোগ পাওয়া নিয়ে সংশয় ছিল।

কিন্তু মাহিশ পাথিরানা ইনজুরিতে থাকায় সুযোগ পেয়ে যান ফিজ। আর তাতেই চমকে দেন সবাইকে। তিনি আক্রমণে এসে ম্যাচের মোড়ই ঘুরিয়ে দেন। প্রথম বল ডট দেয়ার পর অবশ্য দ্বিতীয় বলে তাকে চার হাঁকিয়েছিল ডু প্লেসি। পরের বলেও তুলে মারার চেষ্টা করেন প্রোটিয়া ব্যাটার। কিন্তু তার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ঠিকঠাক সংযোগ ঘটাতে না পেরে ধরা পড়েন ডিপ পয়েন্টে থাকা ফিল্ডার রবীন্দ্রের হাতে। ২৩ বলে ৮ চারের মারে ৩৫ রান করেন ডু প্লেসি। পরের দুই বল ডট দিয়ে শেষ বলে আবার রজতকে কট বিহাইন্ডের শিকার বানিয়ে সাজঘরে পাঠান ফিজ। দারুণভাবে লড়াইয়ে ফেরে চেন্নাই।

বেঙ্গালুরু শিবিরে মুস্তাফিজের চাপ কাজে লাগিয়ে পরের ওভারে এসে সফল হন চাহার। তিনি আউট করেন ম্যাক্সওয়েলকে। গোল্ডেন ডাক দিয়ে আসর শুরু হয় অজি অলরাউন্ডারের। মাঝে ক্যামেরন গ্রিন ও কোহলি মিলে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন। তাদের জুটিতে আসে ৩৫ রান। কিন্তু তাদের বেশিদূর এগোতে দেননি ফিজ। ১২তম ওভারে এসে সাজঘরের পথ দেখান দুই সেট ব্যাটারকেই।

এ ওভারের প্রথম বলটি দেখেশুনে খেলে ১ রান নেন ক্যামেরন গ্রিন। পরের বলে মুস্তাফিজকে লেগে টেনে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে রবীন্দ্রর হাতে ধরা পড়েন কোহলি। ১৯ বলে ২১ রানে থামে তার ইনিংস। পরের বলে ১ রান নিয়ে গ্রিনকে স্ট্রাইক দেন অনুজ রাওয়াত। এবার নিজের অস্ত্র কাটার ছোড়েন ফিজ। জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলে স্টাম্প হারান গ্রিন। ২২ বলে ১৮ রানে থামেন তিনি। পরের দুই বলে ফিজের খরচ ১ রান।

পরের চার ওভারে হাল ধরে দলকে ১১৬ রানে পৌঁছে দেন দীনেশ কার্তিক ও রাওয়াজ। রবীন্দ্র জাদেজা, তুষার পান্ডে, মহেশ থিকশানারা তাদের খুব একটা চাপে ফেলতে পারেননি। ১৭তম ওভারে আক্রমণে আসেন ফিজ। এ ওভারে কোনো উইকেট নিতে না পারলেও মাত্র ৭ রান খরচ করেন টাইগার পেসার।

 

১৮তম ওভারে তুষারকে তুলোধুনো করে ২৫ রান তুলে নেন কার্তিক ও অনুজ রাওয়াত। ১৯তম ওভার নিজের স্পেল শেষ করতে এসে ১৬ রান দেন ফিজ। ৪ ওভার শেষে ২৯ রান খরচায় তার শিকার ৪ উইকেট। আইপিএল ক্যারিয়ারে এটি তার সেরা ইনিংস। আগেরটি ছিল ১৬ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে ২০১৬ সালে।

এ দিকে আগের তিন ওভারে ৩৮ রান খরচ করা তুষার শেষ ওভারে দারুণ বোলিংয়ে খরচ করেন মাত্র ৯ রান। ২ রানের আক্ষেপ নিয়ে আউট হন রাওয়াত। ২৫ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় তিনি করেন ৪৮ রান। কার্তিক ২৬ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৮ রান করেন। দুজনের জুটিতে আসে ৯৫ রান। তাতে ১৭৩ রানে থামে বেঙ্গালুরু।

 


জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়ক রুতুরাজ ও রাচিন উদ্বোধনী জুটিতে ৩৮ রান তোলেন। ১৫ বলে মাত্র ১৫ রান করে চেন্নাইয়ের দলপতি আউট হলেও রানের চাকা সচল রাখেন রাচিন ও অজিঙ্কা রাহানে। ১৫ বলে রাচিনের ৩৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস চেন্নাইকে ভালো সূচনা এনে দেয়। দলীয় ৭১ রানে বিদায় নেন কিউই তারকা।

এরপরে হাল ধরেন রাহানে ও ড্যারিল মিচেল। তবে রাহানে বেশিদূর যেতে পারেননি। ১৯ বলে ২৭ রান করে গ্রিনের বলে বিদায় নেন তিনি। কিছুক্ষণ পরে ১৮ বলে ২২ রান করে মিচেলও বিদায় নিলে বাকি কাজটুকু সারেন শিবম ডুবে ও রবীন্দ্র জাদেজা। দুজনেই দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। মুস্তাফিজের বদলি হিসেবে ব্যাটিংয়ে নেমে ডুবে ২৮ বল থেকে করেন অপরাজিত ৩৪ রান। আর ১৭ বলে অপরাজিত ২৫ রান করে জাদেজা। তাতে ৮ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় পায় চেন্নাই।

মন্তব্য করুন