মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ, ২০২৪, ০৭:৩৮ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

চা বাগানে শিক্ষকের দৈনিক হাজিরা মাত্র ১৭০ টাকা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সুরমা চা বাগানে বাগান পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের দৈনিক হাজিরা মাত্র ১৭০ টাকা। এই স্বপ্ল বেতনের টাকা দিয়ে তাদের সংসার চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। বছরের পর বছর চলে গেলেও তাদের বেতনের কোন পরিবর্তন নেই। দৈনিক যে টাকা পায় সে টাকা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কোন ভাবেই চলতে পারছেনা। বিকল্প কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই বাগানের শিক্ষকরা স্বপ্ল বেতনে চাকরি করছেন।

সুরমা চা বাগান ১০ নম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সেলিনা আক্তার জানান, একজন চা শ্রমিক প্রথম ২৮ টাকা দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করত। গত ২ বছর আগে এখন একজন শ্রমিকের দৈনিক হাজিরা ১৭০ টাকা। সেই অনুপাতে বাগান পরিচালিত
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ১৭০ টাকা হাজিরা ভিত্তিতে বেতন পেয়ে থাকেন। এখন বাজারে জিনিষপত্রের দাম খুব বেশি। ১৭০ টাকা দিয়ে চাল, ডাল, তেল, লবন, মাছ, মাংস কেনা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। বাগানের শিক্ষকরা চরম দারিদ্রতার মধ্য দিয়ে তাদের জীবন চালাচ্ছে।

ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শোভা কৈরি বলেন, আমাদের কর্মসংস্থানের বিকল্প কোন রাস্তা নেই। ১৭০ টাকা বেতনে এখনকার দিনে কেউ কোন কাজ করেনা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাসিক বেতন সহ অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। সেই অনুপাতে বাগানের শিক্ষকদেও কোন বেতন কাঠামো নেই।

মাহঝিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পানতাঁতী জানান, চাবাগানে শিক্ষকদের জীবন কাটে খুবই কষ্টে। বাগান পরিচালিত বিদ্যালয় গুলি সরকারি ভাবে পরিচালনা করা হলে বাগানের শিক্ষকরা অনেক সুযোগ সুবিধা পেত। কিন্তু সরকার বাগানের বিদ্যালয়ের প্রতি কোন নজর নেই। একারনে বাগানের ছেলে মেয়েরা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা পাচ্ছেনা।

সুরমা চাবাগানের ২০ নম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষিকা নমিতা মগৌড় বলেন, চাবাগানের লোকজন সব দিক দিয়ে অবহেলিত। বাগানের তিনটি বিদ্যালয়কে সরকারি ভাবে পরিচালনা করা হলে বাগানের মানুষের অনেক উপকার হত। কম টাকায় চাকরিতে শিক্ষকদের জীবন এখন যেন থমকে গেছে। সুরমা চা বাগানের শ্রমিক নেতা অভিরত বাক্তি বলেন চা বাগানের বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো জাতীয়করণ করার জন্য কয়েক বছর ধরে বাগানের মানুষ দাবি কওে আসছে। বাগানের তিনটি বিদ্যালয় সরকারি করা হলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মানসম্মত শিক্ষা সহ শিক্ষকরা সরকারি হারে বেতন পেত। তাদের দূরাবাস্থতা কেটে যেত। কিন্তু সরকার এ কাজটি করছেনা। এ নিয়ে চাবাগান জনগোষ্ঠির মধ্যে অনেক ক্ষোভ রয়েছে।

মাধবপুর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম বলেন, মাধবপুরে চা বাগান পরিচালিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার মান কোন অবস্থাতেই ভাল নেই। এসব বিদ্যালয় গুলো জাতীয়করণ করা হলে বাগানের প্রাথমিক শিক্ষা ও শিক্ষকের জন্য ভাল হবে। তবে এগুলো জাতীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্ত।

 

মন্তব্য করুন