রাঙামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৬ মে, ২০২৪, ০৯:০৩ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

রাঙামাটির চার উপজেলার নির্বাচন

চেয়ারম্যান পদে ১২ প্রার্থীর ৭ জনই ব্যবসায়ী

ছবি সংগৃহীত

৮ মে প্রথম ধাপে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার চার উপজেলার নির্বাচন। এসব উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধী করছেন মোট ১২ প্রার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন রাঙামাটি সদর উপজেলায় ৫ জন, জুরাছড়িতে ৩ জন, বরকলে ২ জন ও কাউখালীতে ২ জন। পেশায় ১২ প্রার্থীর মধ্যে সাতজন ব্যবসায়ী। চারজন কৃষি এবং একজন আইনজীবী। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামা থেকে প্রার্থীদের এসব তথ্য পাওয়া যায়।

রাঙামাটি সদর উপজেলার সুফিয়া কামাল ঝিমি, শাহাজাহান, অন্ন সাধন চাকমা, পঞ্চানন ভট্টাচার্য্য, জুরাছড়ির জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, বরকলের সন্তোষ কুমার চাকমা ও কাউখালীর শামসুদ্দোহা চৌধুরীর পেশা ব্যবসা। জুরাছড়ির সুরেশ কুমার চাকমা, কেতন চাকমা, বরকলের বিধান চাকমা ও কাউখালীর মংসুইউ চৌধুরী কৃষক এবং রাঙামাটি সদরের বিপ্লব চাকমা আইনজীবী। হলফনামায় প্রার্থীদের কাছে স্বর্ণ, নগদ টাকা, ব্যাংক আমানতসহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ স্থাবর অস্থাবর সম্পদের কথা উল্লেখ রয়েছে।

রাঙামাটি সদরের চেয়ারম্যান প্রার্থী সুফিয়া কামাল ঝিমি পড়ালেখায় বিএ পাস। তার আয়ের উৎস অনলাইন বুটিক ও ফ্যাশন হাউজ। এ খাতে তার বাৎসরিক আয় ২৪ হাজার টাকা। এছাড়া কৃষি ও ব্যবসা খাতে তার স্বামীর বাৎসরিক আয় ১৫ লাখ টাকার কাছাকাছি বা তার অধিক। স্বামীর নামে রয়েছে ১৫ লাখ টাকার এফডিআর ও ১৫ লাখ টাকার ইন্সুরেন্স। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন সুফিয়া কামাল ঝিমির নিকট ছিল নগদ ১ লাখ টাকা, শেয়ার ৫০ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণ, যার মূল ৫ লাখ টাকা। ঋণ রয়েছে নিজের নামে আইএফআইসি ব্যাংক থেকে ১ লাখ টাকা এবং স্বামীর নামে উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড থেকে ৪৫ লাখ টাকা। তবে খেলাপি নন।

শিক্ষাগত যোগ্যতায় শাহাজাহানও বিএ পাস। তার আয়ের উৎস ব্যবসা। এ খাতে তার বাৎসরিক আয় ২লাখ টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট নগদ ৫ লাখ টাকা, ব্যাংকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, ১০ ভরি স্বর্ণের মূল্য ১০ লাখ ৫ হাজার টাকা রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন তিনি।

আইনজীবী বিপ্লব চাকমার সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএল.এম। তার পেশাগত, কৃষি, বাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতে বাৎসরিক আয় প্রায় ২৭/২৮ লাখ টাকা। হলফনামায় মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট নগদ ৩ লাখ, ব্যাংকে জমাসহ বিভিন্ন হিসাবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা রয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।

অন্ন সাধন চাকমা পড়ালেখায় এইচএসসি বা উচ্চমাধ্যমিক। তার কৃষি ও ব্যবসা খাতে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট ছিল নগদ ৭ লাখ টাকা। তার কাছে অন্যান্য স্থাবর অস্থাবর সম্পদ থাকলেও স্বর্ণের কথা উল্লেখ নেই।

অপর প্রার্থী পঞ্চানন ভট্টাচার্য্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তার ব্যবসা খাতে বাৎসরিক আয় ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট ছিল নগদ ৫ লাখ টাকা, ব্যাংকে ২০ হাজার টাকা, প্রাইজবন্ড উপহার বাবদ ৮৫ হাজার টাকা এবং ১০ ভরি উপহারের স্বর্ণ উল্লেখ করেছেন তিনি।

জুরাছড়ির বর্তমান চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা বিএ পাস। তার কৃষি খাতে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট ছিল নগদ ২ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাড়ে ৩ লাখ টাকার অধিক এবং স্ত্রীর নিকট নগদ ৫০ হাজার টাকা, ১৫ ভরি স্বর্ণ ৭ লাখ টাকাসহ নির্ভরশীলদের নিকট নগদ, সাধারণ ভবিষ্যত তহবিলে প্রায় ৪০ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা এইচএসসি পাস। তার ব্যবসা খাতে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট ছিল নগদ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ১৫ হাজারসহ বিভিন্ন হিসাবে প্রায় ১৬ লাখ টাকার সম্পদ। এছাড়া স্ত্রীর নিকট রয়েছে ২০ ভরি স্বর্ণ, মূল্য ৫ লাখ টাকা।

এ উপজেলার অপর প্রার্থী কেতন চাকমাও এইচএসসি পাস। তার কৃষি খাতে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ টাকা এবং নির্ভরশীলদের চাকরির খাতে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট ছিল নগদ ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নিকট নগদ ২ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণ, যা বিবাহ সূত্রে পাওয়া বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বরকলের সন্তোষ কুমার চাকমা এসএসসি পাস। তার বাৎসরিক আয় কৃষিতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ব্যবসা খাতে ৩ লাখ টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট ছিল নগদ ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং উপহারের ১০ভরি স্বর্ণ। বর্তমান চেয়ারম্যান বিধান চাকমা বিএ পাস। তার কৃষি খাতে বাৎসরিক আয় ৫ লাখ টাকা। চেয়ারম্যানের সম্মানী ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট ছিল নগদ ৩ লাখ ৫০ হাজারসহ ব্যাংকে প্রায় ৯ লাখ টাকা। স্ত্রীর নিকট নগদ ৫০ হাজারসহ ব্যাংকে প্রায় ৩ লাখ টাকা। তিনি তার বা স্ত্রীর নিকট স্বর্ণ থাকার কথা উল্লেখ করেননি।

কাউখালী উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দোহা চৌধুরী স্নাতক ডিগ্রিধারী। তার বাৎসরিক আয় কৃষিতে ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা এবং ব্যবসা খাতে ৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত ৪৭ হাজার টাকা ও চেয়ারম্যান সম্মানী জুলাই ২০২২ হতে জুন ২০২৩ পর্যন্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এছাড়া তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় চাকরি খাতে ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট ছিল নগদ ৫ লাখ টাকা, ব্যাংকে ২ হাজার ১০০ টাকা, ২০ভরি স্বর্ণ এবং স্ত্রীর নিকট নগদ ৯৫ হাজার টাকা,ব্যাংকে ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণ, মূল্য ৮০ হাজার টাকা।

অপর প্রার্থী মংসুইউ চৌধুরী উচ্চমাধ্যমিক পাস। তার কৃষিতে বাৎসরিক আয় ২লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া বাড়ি ভাড়া ২০ হাজার ও দোকান ভাড়া পান ৩০ হাজার টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তার নিকট ছিল নগদ ৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণ, মূল্য ২ লাখ টাকা। স্ত্রীর কাছে নগদ ২০ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণ মূল্য ৫০ হাজার টাকা।

মন্তব্য করুন