ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল, ২০২৪, ০৮:০২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

ঝিনাইদহে অধিক চাপেও নলকূপ থেকে উঠছেনা পানি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সারাদেশেই চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ সীমান্তবর্তী অঞ্চল ঝিনাইদহ এর বাইরে নয়। গ্রীষ্মের তাপে মাঠ ফেটে চৌরির অবস্থা পশুপাখি ও প্রাণীকুল হাঁসফাঁস করছে, সেইসাথে যুক্ত হয়েছে পানির সংকট। হস্তচালিত নলকূপ এবং মাঠের সেচ যন্ত্রেও (বরিঙ) উঠছে না পর্যাপ্ত পানি। যার ফলে গৃহস্থালি থেকে শুরু করে মাঠের কৃষক উভয়ই পড়েছে চরম সংকটে।

ঝিনাইদহের খাজুরা গ্রামের মাঠে ৩ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছেন কৃষক কামাল হোসেন। বোরো ধান সেচ নির্ভর হওয়ায় নিয়মিত করতে হয় সেচ প্রদান, কিন্তু হঠাৎ করেই তার সেচ পাম্প দিয়ে এখন আগের মত পানি উঠছে না কিছু দিন আগেও যেখানে সবকিছু ঠিক ছিল এখন ৪ থেকে ৫ ফুট মাটির গভীরে মেশিন বসিয়েও পানি উঠছে না। ভারি বৃষ্টি না হলে তার মতোই ঝিনাইদহের আরও কৃষক বিপাকে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে।

বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত হস্তচালিত টিউবওয়েলগুলোর ও একই অবস্থা। বেশ কয়েক বছর ধরেই জেলার প্রায় ৫০ হাজার টিউবওয়েলে কম পানি উঠে। ভূক্তভোগীরা বলছে, ইরি ধানের সেচ কাজে এবং পুকুর খনন করে মাছ চাষের জন্যে মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করায় পানির স্তর নেমে যাচ্ছে।

জেলার বেশির ভাগ খাল-বিল, নদ-নীদ, পুকুর-জলাশয়, হাওড়-বাওড়ের পানি শুকিয়ে গেছে। বিশেষ করে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদীর প্রায় ৮০ শতাংশ পানি শুকিয়ে গেছে। নদীর চরে এখন কৃষকেরা করছে চাষাবাদ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার ছয়টি উপজেলাযর প্রায় অর্ধলক্ষাধিক নলকূপে পানি কম উঠছে। সাধারণত ২০ থেকে ৩০ ফুট নিচে পানির স্তর পাওয়া যায়। কিন্তু এখন ৩০ থেকে ৪০ ফুট নিচেও পানির লেয়ার মিলছে না।

জেলা কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বলছে, অনুমতি ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও কয়েক হাজার গভীর ও অগভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। এসব নলকূপ থেকে নিয়ম না মেনে পানি উত্তোলন করায় স্তর নেমে যাচ্ছে।

জনস্বাস্থ্য অধিদফতর নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ঝিনাইদহে মোট কত হাজার বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে নলকূপ রয়েছে, তা আমাদের পরিসংখ্যানে নেই। তবে সরকারিভাবে এ জেলায় ১৭ হাজার গভীর ও ১৮ হাজার অগভীর নলকূপ রয়েছে। এসব নলকূপে পানির স্বাভাবিক অবস্থা রয়েছে। প্রকৌশলীদের পরামর্শ নিয়ে নলকূপ স্থাপন করলে শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট কমবে।

ঝিনাইদহ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) মো. জাহিদ হাসান জানান, এখন সময়টা শুষ্ক এবং উষ্ণ এসময় নদ-নদীর পানি কমে আসে। যে কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কিছুটা নেমে যায়। তাই এসময় পানি ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট দফতরের নিয়ম মেনে পাম্প স্থাপন করলে পানির সংকট কমতে পারে।

মন্তব্য করুন